পাহাড় ছাড়তে হুড়োহুড়ি, সংশয় আন্দোলনে
সঞ্জয় চক্রবর্তী
দার্জিলিং: বাসে ভিড় দেখে শঙ্কিত গোর্খাল্যান্ডের দাবিদাররা৷ উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের বাস দেখলেই হুড়োহুড়ি পড়ে যাচ্ছে৷ দলে দলে পাহাড় ছাড়ছেন সাধারণ মানুষ৷ চরম খাদ্য সঙ্কটে কেউ সমতলে গিয়ে আত্মীয়দের বাড়িতে আশ্রয় নিচ্ছেন৷ কেউ আবার রোজগারের আশায় নেমে যাচ্ছেন শিলিগুড়িতে৷ লাগাতার বন্ধ ক্রমেই সহ্যসীমার বাইরে চলে যাওয়ায় পালিয়ে যাওয়াই শ্রেয় মনে করছেন সাধারণ মানুষ৷
এতে দিশেহারা মোর্চা নেতৃত্ব আন্দোলনের রাশ তুলে দিচ্ছেন দলের ছাত্র শাখার হাতে৷ ১২-১৮ বছর বয়সী ছাত্ররাই মঙ্গলবার থেকে 'ঘর বাহার জনতা'র কর্মসূচি সফল করার দায়িত্ব নেবে৷ গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে আন্দোলন পরিচালনার জন্য গঠিত জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটিতে রবিবার আবার ধাক্কা খেয়েছে মোর্চা৷ এ দিন ওই কমিটি থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে রাষ্ট্রীয় গোর্খা কংগ্রেস৷ সিপিআরএম আলাদা ভাবে মিছিল করেছে৷ প্রকাশ্যে না-বললেও বন্ধে বিরতি চাইছে ওই কমিটির অধিকাংশ শরিক৷
পরিস্থিতি দেখে পাহাড়ে মোর্চার আন্দোলনের 'ন্যাচারাল ডেথ' হতে চলেছে বলে এ দিন মন্তব্য করেছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব৷ যারা পাহাড় ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন, তাঁদের যাতে সমস্যা না-হয়, তা সরকার দেখবে বলেও জানিয়েছেন তিনি৷ মুখ্যমন্ত্রী পাহাড়ে আসবেনই বলে এ দিনও গৌতমবাবু ঘোষণা করলেও নির্দিষ্ট দিন জানাননি৷ কোথায় লেপচাদের দেওয়া সংবর্ধনা গ্রহণ করবেন মমতা বন্দোপাধ্যায়, তাও জানাননি তিনি৷
এ দিকে সংবর্ধনা গ্রহণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ইন্ডিজেনাস লেপচা কালচারাল অ্যাসোসিয়েশনের পুর্ব ঘোষিত বৈঠক এ দিন হয়নি৷ শনিবার বৈঠক অসম্পূর্ণ ছিল বলে জানিয়ে সংগঠনের সম্পাদক ভূপেন্দ্র লেপচা বলেছিলেন, রবিবার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে৷ কিন্ত্ত এ দিন বৈঠকটিই হয়নি৷ ভূপেন্দ্রবাবুকে খুঁজেই পাওয়া যায়নি৷ তাঁকে মোবাইলেও ধরা যায়নি৷ এনটি লেপচা, লোপসাং লেপচা প্রমুখ লেপচা নেতাদের মোবাইল বেজে গিয়েছে৷ তাঁরা সাড়া দেননি৷ ফলে তাঁরা আদৌ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কে সংবর্ধনা দেবেন কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়৷
পাহাড় সচল প্রমাণ করার জন্য প্রায় দশ দিন ধরে ওই এলাকায় বাস চালাচ্ছে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম৷ প্রথমে ফাঁকা চললেও গত দু'দিন ধরে প্রচণ্ড ভিড় হচ্ছে বাসগুলিতে৷ বিশেষ করে শিলিগুড়িগামী বাসগুলিতে ঝুলে ঝুলে, এমনকী ছাদে চড়েও পাহাড়ের মানুষকে সমতলে যেতে দেখা যাচ্ছে৷ তাঁরা মুখ খুলতে সাহস না-পেলেও অন্তরঙ্গ আলোচনায় জানিয়েছেন, ঘরে খাবার নেই৷ রোজগারের উপায় নেই৷ তাই পাহাড় ছেড়ে চলে যাওয়া ছাড়া তাঁদের সামনে আর কোনও পথ নেই৷
কিন্ত্ত বিরক্তিতে সাধারণ মানুষের পাহাড় ছাড়ার কথা মানতে রাজি নন মোর্চা নেতারা৷ যদিও দলের বিধায়ক হরকাবাহাদুর ছেত্রী কালিম্পংয়ে এ দিন এক সভায় পাহাড় ছেড়ে না-যাওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছেন৷ আন্দোলনের প্রয়োজনেই সবার পাহাড়ে থাকা দরকার বলে তিনি মন্তব্য করেন৷ তবে তাঁর দাবি, যারা পাহাড় ছাড়ছেন, তাঁরা মূলত শিলিগুড়িরই বাসিন্দা৷ জিএনএলএফের আন্দোলনের সময় ১৯৮৪-তেও এ রকম পরিস্থিতি হয়েছিল৷ কার্শিয়াং, মিরিক থেকে অনেকে হেঁটেই শিলিগুড়ি চলে যাচ্ছেন৷ এতে আবার সমতলে যাতে উত্তেজনা না-ছড়ায়, সেদিকে লক্ষ্য রাখছে প্রশাসন৷
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব এ দিন বলেন, 'দিনের পর দিন এমন অযৌক্তিক বনধের আর কোনও পরিণতি হতে পারে না৷ শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়িতে কমিটি গড়ে ঘরছাড়াদের দিকে নজর রাখা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি৷ 'ঘর বাহার জনতা'র নামে বন্ধে অটল মোর্চা অবশ্য এ সব নিয়ে মাথা ঘামাতে রাজি নয়৷ রবিবার দলের ছাত্র ও যুব শাখার সঙ্গে পাতলেবাসে বৈঠক করেন মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুং৷ মঙ্গলবার থেকে টানা পাঁচদিন পাহাড়ে ১২-১৮ বছর বয়সী ছাত্ররা মিছিল করবে বলে জানান দলের সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি৷
গোর্খা লিগ আগেই সম্পর্ক ছিন্ন করেছে৷ এ দিন জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি ছাড়ল রাষ্ট্রীয় গোর্খা কংগ্রেস৷ দলের সভাপতি নিমা তামাং বলেন, 'আমরা চাই সিকিমের সঙ্গে দার্জিলিং যুক্ত হোক৷ তিন্ত্ত জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটিতে থেকে তা সম্ভব করা যাবে বলে মনে হচ্ছে না৷ তাই আমরা সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত কমিটির আহ্বায়ককে জানিয়ে দিয়েছি৷' আহ্বায়ক এনোস দাস প্রধান ওই খবরের সত্যতা স্বীকার করেছেন৷ তিনি বলেন, '৩০ অগস্ট কমিটির পরবর্তী বৈঠক ডাকা হয়েছে৷' কমিটি সূত্রের খবর, সেই বৈঠকে বন্ধের একতরফা ডাক দেওয়ার জন্য মোর্চাকে প্রশ্নের মুখে পড়তে হতে পারে৷
দার্জিলিং: বাসে ভিড় দেখে শঙ্কিত গোর্খাল্যান্ডের দাবিদাররা৷ উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের বাস দেখলেই হুড়োহুড়ি পড়ে যাচ্ছে৷ দলে দলে পাহাড় ছাড়ছেন সাধারণ মানুষ৷ চরম খাদ্য সঙ্কটে কেউ সমতলে গিয়ে আত্মীয়দের বাড়িতে আশ্রয় নিচ্ছেন৷ কেউ আবার রোজগারের আশায় নেমে যাচ্ছেন শিলিগুড়িতে৷ লাগাতার বন্ধ ক্রমেই সহ্যসীমার বাইরে চলে যাওয়ায় পালিয়ে যাওয়াই শ্রেয় মনে করছেন সাধারণ মানুষ৷
এতে দিশেহারা মোর্চা নেতৃত্ব আন্দোলনের রাশ তুলে দিচ্ছেন দলের ছাত্র শাখার হাতে৷ ১২-১৮ বছর বয়সী ছাত্ররাই মঙ্গলবার থেকে 'ঘর বাহার জনতা'র কর্মসূচি সফল করার দায়িত্ব নেবে৷ গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে আন্দোলন পরিচালনার জন্য গঠিত জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটিতে রবিবার আবার ধাক্কা খেয়েছে মোর্চা৷ এ দিন ওই কমিটি থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে রাষ্ট্রীয় গোর্খা কংগ্রেস৷ সিপিআরএম আলাদা ভাবে মিছিল করেছে৷ প্রকাশ্যে না-বললেও বন্ধে বিরতি চাইছে ওই কমিটির অধিকাংশ শরিক৷
পরিস্থিতি দেখে পাহাড়ে মোর্চার আন্দোলনের 'ন্যাচারাল ডেথ' হতে চলেছে বলে এ দিন মন্তব্য করেছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব৷ যারা পাহাড় ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন, তাঁদের যাতে সমস্যা না-হয়, তা সরকার দেখবে বলেও জানিয়েছেন তিনি৷ মুখ্যমন্ত্রী পাহাড়ে আসবেনই বলে এ দিনও গৌতমবাবু ঘোষণা করলেও নির্দিষ্ট দিন জানাননি৷ কোথায় লেপচাদের দেওয়া সংবর্ধনা গ্রহণ করবেন মমতা বন্দোপাধ্যায়, তাও জানাননি তিনি৷
এ দিকে সংবর্ধনা গ্রহণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ইন্ডিজেনাস লেপচা কালচারাল অ্যাসোসিয়েশনের পুর্ব ঘোষিত বৈঠক এ দিন হয়নি৷ শনিবার বৈঠক অসম্পূর্ণ ছিল বলে জানিয়ে সংগঠনের সম্পাদক ভূপেন্দ্র লেপচা বলেছিলেন, রবিবার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে৷ কিন্ত্ত এ দিন বৈঠকটিই হয়নি৷ ভূপেন্দ্রবাবুকে খুঁজেই পাওয়া যায়নি৷ তাঁকে মোবাইলেও ধরা যায়নি৷ এনটি লেপচা, লোপসাং লেপচা প্রমুখ লেপচা নেতাদের মোবাইল বেজে গিয়েছে৷ তাঁরা সাড়া দেননি৷ ফলে তাঁরা আদৌ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কে সংবর্ধনা দেবেন কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়৷
পাহাড় সচল প্রমাণ করার জন্য প্রায় দশ দিন ধরে ওই এলাকায় বাস চালাচ্ছে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম৷ প্রথমে ফাঁকা চললেও গত দু'দিন ধরে প্রচণ্ড ভিড় হচ্ছে বাসগুলিতে৷ বিশেষ করে শিলিগুড়িগামী বাসগুলিতে ঝুলে ঝুলে, এমনকী ছাদে চড়েও পাহাড়ের মানুষকে সমতলে যেতে দেখা যাচ্ছে৷ তাঁরা মুখ খুলতে সাহস না-পেলেও অন্তরঙ্গ আলোচনায় জানিয়েছেন, ঘরে খাবার নেই৷ রোজগারের উপায় নেই৷ তাই পাহাড় ছেড়ে চলে যাওয়া ছাড়া তাঁদের সামনে আর কোনও পথ নেই৷
কিন্ত্ত বিরক্তিতে সাধারণ মানুষের পাহাড় ছাড়ার কথা মানতে রাজি নন মোর্চা নেতারা৷ যদিও দলের বিধায়ক হরকাবাহাদুর ছেত্রী কালিম্পংয়ে এ দিন এক সভায় পাহাড় ছেড়ে না-যাওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছেন৷ আন্দোলনের প্রয়োজনেই সবার পাহাড়ে থাকা দরকার বলে তিনি মন্তব্য করেন৷ তবে তাঁর দাবি, যারা পাহাড় ছাড়ছেন, তাঁরা মূলত শিলিগুড়িরই বাসিন্দা৷ জিএনএলএফের আন্দোলনের সময় ১৯৮৪-তেও এ রকম পরিস্থিতি হয়েছিল৷ কার্শিয়াং, মিরিক থেকে অনেকে হেঁটেই শিলিগুড়ি চলে যাচ্ছেন৷ এতে আবার সমতলে যাতে উত্তেজনা না-ছড়ায়, সেদিকে লক্ষ্য রাখছে প্রশাসন৷
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব এ দিন বলেন, 'দিনের পর দিন এমন অযৌক্তিক বনধের আর কোনও পরিণতি হতে পারে না৷ শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়িতে কমিটি গড়ে ঘরছাড়াদের দিকে নজর রাখা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি৷ 'ঘর বাহার জনতা'র নামে বন্ধে অটল মোর্চা অবশ্য এ সব নিয়ে মাথা ঘামাতে রাজি নয়৷ রবিবার দলের ছাত্র ও যুব শাখার সঙ্গে পাতলেবাসে বৈঠক করেন মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুং৷ মঙ্গলবার থেকে টানা পাঁচদিন পাহাড়ে ১২-১৮ বছর বয়সী ছাত্ররা মিছিল করবে বলে জানান দলের সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি৷
গোর্খা লিগ আগেই সম্পর্ক ছিন্ন করেছে৷ এ দিন জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি ছাড়ল রাষ্ট্রীয় গোর্খা কংগ্রেস৷ দলের সভাপতি নিমা তামাং বলেন, 'আমরা চাই সিকিমের সঙ্গে দার্জিলিং যুক্ত হোক৷ তিন্ত্ত জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটিতে থেকে তা সম্ভব করা যাবে বলে মনে হচ্ছে না৷ তাই আমরা সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত কমিটির আহ্বায়ককে জানিয়ে দিয়েছি৷' আহ্বায়ক এনোস দাস প্রধান ওই খবরের সত্যতা স্বীকার করেছেন৷ তিনি বলেন, '৩০ অগস্ট কমিটির পরবর্তী বৈঠক ডাকা হয়েছে৷' কমিটি সূত্রের খবর, সেই বৈঠকে বন্ধের একতরফা ডাক দেওয়ার জন্য মোর্চাকে প্রশ্নের মুখে পড়তে হতে পারে৷
No comments:
Post a Comment