Follow palashbiswaskl on Twitter

ArundhatiRay speaks

PalahBiswas On Unique Identity No1.mpg

Unique Identity No2

Please send the LINK to your Addresslist and send me every update, event, development,documents and FEEDBACK . just mail to palashbiswaskl@gmail.com

Website templates

Jyoti basu is dead

Dr.B.R.Ambedkar

Monday, May 25, 2015

ত্রিশালে নজরুল মেলা

ভক্ত অনুরাগীদের ঢল কারুপণ্যের শত স্টল নাগরদোলা

তারিখ: ২৬/০৫/২০১৫

Janakantha

  • ত্রিশালে নজরুল মেলা

বাবুল হোসেন ॥ দিনভর আকাশে কালো মেঘের আনাগোনা। সঙ্গে ভ্যাপসা গরম। হাঁসফাঁস অবস্থা। এক ফাঁকে খনিকের জন্য রোদের দেখা মিলে। শেষ পর্যন্ত কালো মেঘেই থাকল ত্রিশালের আকাশ। এরই মধ্যে ত্রিশালের দরিরামপুর একাডেমি মাঠের নজরুল মেলায় নামে হাজারও মানুষের ঢল। নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে তেমন কড়াকড়ি না থাকায় নজরুল প্রেমিক তিন প্রজন্মের ভক্ত অনুরাগী আর নজরুল গবেষকদের এই ভিড় যেন এবার একটুখানি বেশি। সকাল দুপুরের ভ্যাপসা গরমেও গমগম করা ভিড় ঠেলে অনেকে কেনাকাটা করে ফিরছেন পছন্দের পণ্যটি। বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে মেলার আনন্দ উচ্ছ্বাস ছিল এবার বাঁধভাঙ্গা। নাগরদোলা, পুতুল নাচ, জাদু প্রদর্শনী, ট্রেনে ভ্রমণ, মোটরসাইকেলের মৃত্যুকূপ আর ম্যাজিক শো উপভোগ শেষে পছন্দের সব খেলনা কেনে বাড়ি ফিরেছে শিশুরা হাশিমুখে। নজরুল জন্মজয়ন্তীর উৎসব নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের দায়সাড়া আয়োজনকে প্রাণ দিয়েছে এ মেলা। ১৯১৪ সালের এ দিনে কবি নজরুলকে ত্রিশালে নিয়ে এসেছিলেন দারোগা রফিজ উল্লাহ। কবি নজরুলের ত্রিশাল আগমনের ১০১ বছরে এ উৎসবকে জাঁকজমক ও প্রাণবন্ত না করে স্থানীয় প্রশাসন দায়সাড়া আয়োজন করে। জাতীয় পর্যায়ে প্রচার করা হলেও ত্রিশালে নজরুল জন্মজয়ন্তীর উৎসবের দায়সাড়া আয়োজনে হতাশ এলাকাবাসী বলছেন মেলায় স্টল বরাদ্দের ইজারার টাকায় এ রকম আয়োজন দুঃখজনক। ত্রিশালের নামাপাড়া বিচুতিয়া বেপারীর বংশধর আব্দুল বারেক বেপারী ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, দরিরামপুর একাডেমি মাঠের এ রকম দায়সাড়া আয়োজন এর আগে কখনও দেখা যায়নি।
দ্রোহ প্রেম ও সাম্যের কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১১৬তম জন্মজয়ন্তীর উৎসব উপলক্ষে ত্রিশালের দরিরামপুর একাডেমি মাঠে বসেছে নজরুল মেলা। স্থানীয় জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে একাডেমি মাঠের নজরুল মঞ্চে সোমবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. গওহর রিজভী নজরুল জন্মজয়ন্তী উৎসবের উদ্বোধন ঘোষণার আগেই মূলত জমে উঠে তিন দিনব্যাপী এ মেলা। সোমবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হওয়া এ মেলা আগামীকাল বুধবার পর্যন্ত চলার কথা থাকলেও এই মেয়াদ আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন স্টল মালিকরা। এবারের মেলা শুরুও হয়েছে একদিন আগে রবিবার থেকে। উদ্বোধনী পর্বের পর পরই মেলায় নজরুল প্রেমিক ভক্ত অনুরাগীদের ঢল নেমে আসে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা দরিরামপুর একাডেমি মাঠ ও ত্রিশাল নজরুল ডিগ্রী কলেজ মাঠের মেলায় বসেছে প্রায় এক হাজার শতাধিক স্টল। নিত্য প্রয়োজনীয় গৃহস্থালী সামগ্রী ও হরেক রকমের খাবার ছাড়াও মেলায় বিনোদনের জন্য রয়েছে আবহমান বাংলার চিরায়ত ঐতিহ্যের পুতুল নাচ, নাগরদোলা, ম্যাজিক শো ও মোটরসাইকেল রেস। মুখরোচক আঁচার আর চটপটি, বাঁশের বাঁশি, কারুপণ্য ও খেলনাসহ আছে নানা কিছু। এবারে একাডেমি মাঠে বাড়তি আয়োজনের মধ্যে রয়েছে বইমেলা। বইমেলায় ২০টি স্টল বসেছে। এর মধ্যে বাংলা একাডেমি, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, নজরুল ইনস্টিটিউটের স্টলও রয়েছে। মেলার স্টলগুলোতে নজরুলের অসংখ্য বই ছিল চোখে পড়ার মতো। নজরুলজয়ন্তী উৎসবের উদ্বোধনের আগে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বইমেলার উদ্বোধন করেন। এরপর বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে মূল আয়োজনের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী পর্বে ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মোস্তাকীম বিল্লাহ ফারুকী সভাপতিত্ব করেন। উদ্বোধনী পর্বের নজরুল স্মারক বক্তা ছিলেন কবি নুরুল হুদা।
মাঝেমধ্যে কালবৈশাখী ঝড়ের সঙ্গে বৃষ্টি হলেও গ্রীষ্মের প্রচ- গরমের মধ্যে গত কয়েকদিন ধরে চলছিল তীব্র দহন। বৃষ্টির দেখা নেই। নজরুল জন্মজয়ন্তীর উৎসবে আকাশভাঙ্গা বৃষ্টি অনেকটা রেওয়াজের মতো হলেও এবার ছিল ব্যতিক্রম। তারপরও আয়োজকদের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছিল বৃষ্টি নিরোধক বাড়তি ব্যবস্থা। নকশী কাঁথার সামিয়ানা টানিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বেষ্টনীর পুরোটাই ঢেকে দেয়া হয় ত্রিপলের সঙ্গে নিরাপত্তার চাদরে। এবারের আয়োজনে রাষ্ট্রপতির কিংবা প্রধানমন্ত্রীর কর্মসূচী না থাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে ছিল না কোন বাড়াবাড়ি। ফলে উদ্বোধনী পর্বের আগ থেকেই উন্মুক্ত করে রাখা হয় নজরুল একাডেমি মাঠ। এ কারণে নজরুলজয়ন্তী উদ্বোধন ঘোষণার আগেই সোমবার সকাল থেকে জনস্রোত নামে নজরুল মেলায়। প্রতি বছরের মতো এবারও নজরুল জন্মজয়ন্তীর উৎসব উপলক্ষে আয়োজন করা হয়েছে তিন দিনব্যাপী নজরুল মেলার। মেলাকে প্রাণবন্ত করতে দেশের নানা প্রান্ত থেকে নিয়ে আসা হয়েছে নানা আয়োজনের বিনোদন। ঐতিহ্যের পুতুল নাচে সোমবার প্রথম দিনেই ছিল গমগম করা দর্শক উপস্থিতি। একই চিত্র দেখা গেছে মেলার নাগরদোলায়। বিশেষ করে শিশু কিশোরদের বাঁধভাঙ্গা আনন্দ উচ্ছ্বাস ছিল এই নাগরদোলাকে ঘিরে। এর বাইরে নজরুলের বাঁশের বাঁশি ও গ্রামীণ জীবনের ঐতিহ্য কারুপণ্যের স্টল মেলাকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে। এবারের মেলায় নতুন করে যোগ হয়ে ট্রেনে ভ্রমণ। ভিড় ছিল নাগরদোলা, পুতুল নাচ ও মোটরসাইকেলের মৃত্যুকূপসহ ম্যাজিক শো ও জাদু প্রদর্শনীতে। ত্রিশালের কাঠাল এলাকার গৃহবধূ আলপনা জানান, এই দিনটির জন্য অপেক্ষায় থাকেন অনেকে। স্বামীর বাড়ি থেকে ছেলেমেয়েদের নিয়ে ত্রিশালের বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসেন এ নজরুল মেলার জন্য। ত্রিশালবাসীর জন্য এই দিনটি আনন্দের, ঈদের মতোই জানান, কাজিরশিমলা গ্রামের মালতি। গৃহস্থালির বটিদা, বেলনা, ভাজাকাঠি ও হাঁড়ি পাতিল থেকে শুরু করে নানাকিছু ছিল মেলার স্টলে স্টলে। আঁচার, চটপটি, জিলাপি, পিয়াজু থেকে নানা রকমের মুখরোচক খাবারের স্টলেরও কোন কমতি ছিল না এবারের নজরুল মেলায়। ছিল খেলার ব্যাট, বল ও গার্মেন্টস পণ্যসহ শোবার খাট পালঙ্ক পর্যন্ত। ত্রিশালের দরিরামপুর একাডেমি মাঠে আয়োজিত জয়ন্তীর উৎসব দেখতে আসা নজরুল প্রেমিক ভক্ত অনুরাগীদের সঙ্গে বৃহত্তর ময়মনসিংহ থেকে ত্রিশালের আত্মীয় স্বজনদের বাসা বাড়িতে বেড়াতে আসা শিশু কিশোর ও গৃহবধূরা নজরুলের নানা অনুষ্ঠান উপভোগ শেষে মেলা থেকে পছন্দের জিনিসপত্র কিনে ফিরছেন। নজরুল জন্মজয়ন্তীর উৎসব উপলক্ষে দারোগা বাড়ি, বিচুতিয়া বেপারী বাড়ি ও নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়েও ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানমালাসহ নানা আয়োজনে উৎসবমুখর।

No comments: