- Sukriti Ranjan Biswas পলাশদা, লিখতে হলে বিসয়টা ভালো করে বুঝতে হয় / আধা জেনে না লেখাই ভালো /--------------- এই লেখার মধ্যে সুকৃতি কেন ? মাথায় গন্ডগোলের লক্ষণ / আর.
- Sukriti Ranjan Biswas আর পি আই চলে গেল বি জে পি-শিবসেনার সাথে / আমি একা নই, রাজ্য কমিটি ওই দল ছেড়ে দেই / আপনার কি উপদেশ ?-- বি জে পি - শিবসেনার সাথে যাওয়া ঠিক ছিল ? আমি একা কোনো দল বদল করিনি / আমাদের গ্রুপ অন্যান্য গ্রুপের সাথে মিলে একটা শক্তিশালী দল গঠনের চেষ্টা চালাচ্ছি / তাতে আপনার আপত্তি আছে? নিন্দা করার আগে একবার কথা বলে নিতে পারতেন / যারা কিছু করার চেষ্টা চালাচ্ছে, তাদের ভুল হতে পারে / কিনতু আপনার মতোদের ভূমিকা দুধে চোনা মেশানো / যার এম পি-এম এল এ হবার লালসা , সেকি এইসব ছোট দল করে ? নিন্দা করতে গেলেও যে, কিছু বুদ্ধি দরকার / আর আপনি হয়তো জানেন না যে , গত লোকসভা নির্বাচনে এম পি টিকেটের প্রস্তাব ছিল-- গ্রহণ করলে এবার পুনর্নির্বাচনের জন্য ভোট চাওয়া যেত /
- Palash Biswas Since I believe,You have the greatest potential amongst us,who may lead us in our plight.Simply you did deprived us and betrayed your oown capability.You could have mobilised us long before.I consider your VRS from UBI and leaving the UBI trade union opting for Political solution in the hegemony rule spoilt our chances of resistance whatsoever.It is neither subjective nor personal.
As far my writing in Bengali is concerned I am not habitual rather I have to write in Bengali with extreme effort.I consider you a very good writer.
Hence,you should reconsider on your special merit which you are wasting in politics which may not open any avenue for us,you know iy better than me.You may explain it more effectively. - Palash Biswas I was looking forward to you for leadership.You know it better that I do not favour any political color.Neither I am a refugee leader as others are.I am a very junior journalist who eventually happens a son of peasant refugee.My point of view may be right,may be wrong.It makes no difference at all.But who happens to be in public life,their personal act remains no more personal.It relates to public welfare in every sens.I am sorry that you still do aspire to become yet another Narendra Modi forgetting the original Sukriti Ranjan Biswas loved,respected and known by us.
http://shudhubangla.blogspot.in/2014/05/1947-1971-1947.html
উদ্বাস্তু ও অনুপ্রবেশকারি,হিন্দু ও মুসলিম বিভাজনসত্বেও মোদীকে ধন্যবাদ যে তিনি বাংলার নেতা মনেতৃদের মুখোশ খুলে দিতে পারছেন। নাগরিকত্ব সংশোধণী আইন পাশে যাদের সবারই সমান ভূমিকা। সেই আইন অনুযায়ীই মোদী 1947 সালের পর সব্বাইকে তল্পি তল্পা গুছিয়ে নিতে বলেছেন এবং সে আইন মোদীকে ছেকাতে পারলেও বলবত থাকছে।যারা 1971 সালের পর এসেছেন,তাঁরাও অনেকে এ রাজ্যে মন্ত্রী এমএলএ এমপি হয়ে সব সুবিধা বোগ করেছেন,করছেন,সংরক্ষণে জমিয়ে চাকরি করছেন, তাঁরা নিজেদের চামড়া বাঁচাতে 1947 এর আগে পরে আসা সর্বস্বহারাদের বলির পাঁঠা করে দিচ্ছেন সারা ভারতে।
পলাশ বিশ্বাসতবু মন্দের ভালো,কল্কি অবতার দিদি বলে ডেকেছেন,দিদি ডাকে বাংলা মাতিয়েছেন এবং কলকাতা ও শহরতলির গৌরিক সুনামী অভিযানে অন্ততঃ বাঙালি অবাঙালি বিভাজনরেখা টানার চেষ্টা করেছেন।মোদীকে অসংখ্য ধন্যবাদ,তিনি 2005 সালে অনুপ্রবেশকারীবিরুদ্ধে দিদির সংসদীয় বয়ান জনসমক্ষে তুলে ধরেছেন।
আমাদের পিছনে বাজারের লগ্নি নেই। রাতারাতি শেয়ারে বাজারে লাখ লাখ টাকার সাট্টা হবে না আমাদের বক্তব্যের নিরিখে।নিপ্টিতে রাতারাতি ষাঁঢঞের হানাদারি চলবে না আমাদের পক্ষে।করপোরেট সমুহ থলির মুখ খুলে বসে থাকবে না।
2003 সাল থেকে টানা দৌড়ে সারা দেশে কত জায়গায আর যেতে পারলাম।ট্রেনে বাসে কতদুর যাওয়া যায়।
বন্ধু সুকৃতি বিশ্বাস অসম্বব ভালো বক্তা।খূব ভালো বাংলা লিখতে পারেন।তিনি ইউবিআই ট্রেড ইউনিয়নের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। প্লেনে যেখানে ইচ্ছে যাওয়ার ক্ষমতা ছিল,মতুয়াদের নিয়ে একটি লড়াইও শুরু করেছিলেন।
কোথায কি,এমপি এমএলএ হওয়ার আকাঙ্খায় চাকরি ছেড়ে,ইউনিয়ন ছেড়ে,দলবাজিতে এমন মেতেছেন যে সেষ মুহুর্তেও বনা অসম্ভব আপাতত তিনি কোন দলে।মথুরাপুর থেকে কংগ্রেস সমর্থিত রিপাবলিকান প্রত্যাশী হওযার পর কত পার্টি করলেন,কত ছাড়লেন হিসাব করা মুশকিল।
যারা 1971 সালের পর এসেছেন,তাঁরাও অনেকে এ রাজ্যে মন্ত্রী এমএলএ এমপি হয়ে সব সুবিধা বোগ করেছেন,করছেন,সংরক্ষণে জমিয়ে চাকরি করছেন, তাঁরা নিজেদের চামড়া বাঁচাতে 1947 এর আগে পরে আসা সর্বস্বহারাদের বলির পাঁঠা করে দিচ্ছেন সারা ভারতে।
আমার বাংলা লেখার অভ্যাসও নেই।জন্ম থেকে উত্তরাখন্ডে মানুষ।বাংলা আর ইংরেজিতেই এযাবত কাল লেখা হয়েছিল। প্রাণের তাকিদে বাংলায় লেখার চেষ্টা করছি হালফিলে।ঝরঝরে কবিত্বমাখা ভাবালু লেখা আঙুলে আসেনা।ঠিক গুছিয়ে লিখতে পারছি না।যা লিখি,দশজনেও পড়ছেন কিনা জানিনা।পুরোটাই হয়ত পন্ডশ্রম।
তবু আমার স্বজনরা বিপদে পড়লে,কারুর মুখের দিকে না তাকিয়ে আমাকেই শেষপর্যন্ত মরণ বাঁচণ লড়াইয়ে ঝাঁপাতে হবে,এপার ওপার বাংলা ও সর্বহারাদের সর্বস্বহারাদের নেতা ছিলেন আমার প্রযাত পিতা নৈনীতালের পুলিনবাবু,যিনি মেরুদন্ডে ক্যান্সার নিয়েও শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত লড়েছেন অবিরাম।তাঁরই শিক্ষা।
উদ্বাস্তুদের ও চাষিদের,বাস্তুহারাদের স্বার্থে সব কজন রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রিদের সঙ্গে মুখোমুখি সংলাপ চালিয়ে গেছেন ক্লাস টু পড়া সর্বস্বান্ত আমার বাবা।তার তুলনায় আমি যথেষ্ট শিক্ষিত।তিনি বলতেন,লড়াইয়ে,সম্ভব অসম্ভব কিছুই হয়না।লড়ার ইচ্ছেটাই আসল। যোগ্যতা না তাকলে,যোগ্যতা অর্জন করতে হয়,ভাষা না জানলে,শিখতে হয়।তাই শেখার প্রয়ত্নেই লিখে যাওয়া।
মোদী নির্বাচনী প্রচারে সারা দেশে যত দৌড়েছেন,সারা জীবন দৌড়েও আমার বাবা ততদুর যেতে পারেননি,আমি কোন ছার।একটি সমাবেশে আমার যত স্বজনকে মুখোমুখি সম্বোধিত করেছেন,আমি এবং অবশ্যই আমার বাবা দশ জনমেও তত মানুষকে আমাদের কথা জানাতে পারব না।
উদ্বাস্তু ও অনুপ্রবেশকারি,হিন্দু ও মুসলিম বিভাজনসত্বেও মোদীকে ধন্যবাদ যে তিনি বাংলার নেতা মনেতৃদের মুখোশ খুলে দিতে পারছেন। নাগরিকত্ব সংশোধণী আইন পাশে যাদের সবারই সমান ভূমিকা। সেই আইন অনুযায়ীই মোদী 1947 সালের পর সব্বাইকে তল্পি তল্পা গুছিয়ে নিতে বলেছেন এবং সে আইন মোদীকে ছেকাতে পারলেও বলবত থাকছে।
মোদীকে ধন্যবাদ,নগ্ন বাঙালি বিদ্বেষ সত্বেও সীমান্তরেখা পারাপার বাঙালি জাতিসত্তার অমোঘ বিপর্যয় চোখে আঙুল দিয়ে দেখিযে দেওয়ার জন্য।
প্রণব মুখার্জি তখন বলেছিলেন,সংসদীয কমিটির চেয়ারপারসন পদ থেকে,উদ্বাস্তুদের তামা সংগছনের পক্ষ শোনার আবেদন নাকচ করে,বাকায়দা প্রতিপক্ষ কংগ্রেস নেতা হিসেবে,আমি ভারতের গৃহমন্তরী হলে ওপার বাংলার সব অনুপ্রবেশকারি হিন্দু মুসলমান সবাইকে কবেই তাড়িযে দিতাম।
যেদিন লোকসভায় নাগরিকত্ব বিল পাশ হয়,খবর আসতেই বামবন্থীদের জনে জনে ফোন করেছিলাম,আপনারা কি করছেন।
সূর্যকান্ত বাবুকে উদ্বাস্তু নেতা হিসেবে চিনি না।
কিন্তু বুদ্ধবাবূ মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন সেদিনও।তাঁকে,প্রয়াত মন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তীকে,উদ্বাস্তু নেতা ও মন্ত্রী কান্তি বিশ্বাসকে,বাম ফ্রন্টের বর্তমান বঙ্গীয় চেয়ারম্যান বিমান বসুকে,আদিবাসী নেতা ও মন্ত্রী উপেন কিস্কুকে আরও অনেকেক সেদিন ফোন করেছিলাম।
বামপন্থী মন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রী নেতা সাংসসদ সব্বাই সেদিন ও সংসদে নাগরিকত্ব আইনে সমর্থন দেওয়ার পর পরই আশ্বস্ত করেছিলেন যে তাঁরা উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব নিয়ে লড়বেন।
তারও পূর্বে আগরতলায় মেলাবাড়ির বসর্জনী লেকের ধারে গেস্ট হাউসে কৃষক নেতা পীতবসন দাস বললেন,উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দেওয়ানোর দায় বামপন্থীদের নেই।সাক্ষী ছিলেন কবি ও ত্রিপুরার বরিষ্ঠতম মন্ত্রী ও কবি অনিল সরকার।
যার সঙ্গেই আগরতলায় নাগরিকত্ব বিলের বিরুদ্ধে প্রেস কন্ফ্রেন্স করেছিলাম এবং সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন,এই আইন সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না।সেদিন আগরতলার সব কাগজে এই সংবাদ ছাপা হয়ে ছিল।
বাংলার সাংসদ,মন্ত্রীরাও নাগরিকত্ব আইন নিয়ে কিচ্ছুই সেদিন জানতেন না।
আজও জানেন বলে ,মনে হচ্ছে না।
জানলে,মোদীর বক্তব্যের প্রসঙ্গে ঔ আইনের বিরোধিতাও হত।
সেটা কিন্তু আজও কেউ করছেন না।মোদী ঠিক কথাই বলেছেন যে বাংলার নেতারা ভোটব্যান্কের রাজনীতি করছেন।
নজরুল ইসলামও ঠিক সেই কথা বলছেন।
তবে ভোটব্যান্কের রাজনীতিতে এবার কিন্তু টেক্কা মারলেন মোদী।মতুয়া ভোট নিয়ে যা যা হল এবং হবে,তা রীতিমত মহাভারত।
বিধানসভা ভোটের আগে বাম তৃণমুলি সংযুক্ত উদ্বাস্তু মতুয়া সম্মেলনও হল নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে।দিল্লী কোলকাতা গুয়াহাটি মুম্বাই নৈনীতালে পাটনা রাঁচি ভুবনেশ্বর রায়পুরে সব পক্ষের নেতারা উদ্বাস্তু সমর্থনের প্রয়োজনীযতার মুহুর্তে নাগরিকত্ব গাজর ঝোলাচ্ছে এবং অন্যদিকে ঔ আইনে সব দলের সরকারই উদ্বাস্তুদের তাড়ানোর সব ব্যবস্থাই করছেন।
লম্বা ল্লম্বা বক্তৃতা,ফোটো সেশান সবি ত হল,নাগরিকত্ব আইন বাতিল করার কোনো দাবি বাংলার নেতা নেত্রীরা আজ অবধি করেছেন কিনা আমার জানা নেই।
যেমন গুয়াহাটিতে নাগরিকত্ব সংসোধণী বিল পাস করার পর পরই দাবি করেছিলেন আদবাণী,পশ্চিম পাকিস্তানের সব উদ্বাস্তুরাই ভারতীয়।
আদবাণীর দাবি, বাংলার কোনো মুখ্যমন্ত্রী,ত্রিপুরার কোনো মুখ্যমন্ত্রী ,উত্তরপ্রদেশের বাঙালিনী মুখ্যমন্ত্রী সুচেতা কৃপালানী,কোনো বাঙালি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দেবার চেষ্টাই করেননি।আদবাণীর দাবি,বাংলা ও বাংলার বাইরের কোনো বাঙালি সাংসদ আজ অবধি 2003 সাল পর্যন্ত সংসদে পূর্ববহ্গের উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্বের দাবি তোলেননি।
সংবাদ মাধ্যমে যে বিভাজন ধরা পড়েনি,আগে সে কথায় আসি,মোদী এ যাবত হিন্দু উদ্বাস্তুদের শরণার্থী বলে আসছিলেন,এবার শুধু মতুয়াদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বললেন।সব হিন্দু উদ্বাস্তু কিন্তু মতুয়া নন।আনন্দবাজার পড়ুনঃ
vote-logo
মতুয়াদের অধিকার নিয়েও বঙ্গ-সফরে সরব মোদী
নিজস্ব প্রতিবেদন
৮ মে, ২০১৪, ০৩:৪৯:৩৬
অনুপ্রবেশকারী-তত্ত্ব নিয়ে তরজা চলছিলই বিতর্কের মুখে তা নিয়ে ব্যাখ্যাও দিচ্ছিলেন নরেন্দ্র মোদী। তারই সঙ্গে এ বার মতুয়াদের অধিকারের প্রশ্নে সরব হয়ে নতুন চাল দিলেন বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী। দিল্লিতে ক্ষমতায় এলে তাঁদের সরকার মতুয়াদের নাগরিকত্ব দেবে বলে আশ্বাস দিলেন তিনি রাজ্যে চতুর্থ দফার ভোটের দিন প্রচারে এসে মোদীর সভা ছিল কৃষ্ণনগর, বারাসত ও কাঁকুড়গাছিতে। দক্ষিণবঙ্গে নদিয়া ও উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রভাব যথেষ্ট। গত বিধানসভা ভোটের আগে মতুয়া-মন জয়ের লক্ষ্যে তৃণমূল এবং বামের রেষারেষিও বেধেছিল। সাম্প্রতিক সব ভোটের নিরিখে মতুয়া ভোটব্যাঙ্কের সিংহ ভাগ অবশ্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দখলে। দক্ষিণবঙ্গের প্রচারে তৃণমূলের ওই ভোটব্যাঙ্ককে নিশানা করতে চেয়েছেন মোদী।
বস্তুত, অনুপ্রবেশ সমস্যা নিয়ে বিজেপি-র যা বক্তব্য, তার সঙ্গেই মতুয়াদের বঞ্চনার প্রসঙ্গ জড়িয়ে নিয়েছেন মোদী। কৃষ্ণনগর এবং বারাসতে দু'টি সমাবেশেই বুধবার মতুয়া-প্রসঙ্গ তুলেছেন বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী। বলেছেন, "মতুয়াদের এখনও ভারতসন্তানের স্বীকৃতি মিলল না। অনুপ্রবেশ করে যাঁরা আসছেন, তাঁরা সব পাচ্ছেন। অথচ মতুয়ারা এখনও নাগরিকত্ব পেলেন না। দিল্লিতে গিয়ে আমি এই অধিকার আপনাদের দেব।" এ দেশে অনুপ্রবেশকারীরা এসে যাবতীয় সুবিধা পাবেন অথচ মতুয়ারা নাগরিকত্বের অধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন কেন এই ভাবেই বিষয়টি দেখাতে চেয়েছেন মোদী। পরে কাঁকুড়গাছির সভাতেও এই কথার পুনরাবৃত্তি করেছেন তিনি।
মোদীর বক্তব্য, "দিদি আপনাকে প্রশ্ন করতে চাই, আপনি বাংলাদেশিদের জন্য, ভোটব্যাঙ্কের জন্য মোদীকে জেলে পুরতে চাইছেন। কিন্তু এখানকার মতুয়া সম্প্রদায়ের জন্য কী করছেন? এরা 'ভারত মা কী জয়' বলে। ভারতে থাকতে চায়। তাদের কেন ভারতের নাগরিক করলেন না? আমি কথা দিচ্ছি, মতুয়া সম্প্রদায়ের কথা মন দিয়ে শুনে ব্যবস্থা নেব।"মোদীর এই বক্তব্য অবশ্য নস্যাৎ করে দেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা। মোদীর কাঁকুড়গাছির সভার প্রায় কাছাকাছি সময়ে বেহালায় তৃণমূলের সমাবেশ থেকে মমতা বরং নিজস্ব কায়দায় মোদীকে আক্রমণ করেছেন মতুয়া-প্রশ্নেও। মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, "ও (মোদী) কি গাধা না ভোঁদা? জানে না কিছুই! ওরা ভারতীয় নাগরিক। মতুয়াদের লক্ষ লক্ষ সমর্থক আছেন। কোত্থেকে নাগরিকত্ব দিবি? ওরা তো হয়েই বসে আছে!" গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রীকে কেন এ ভাবে তুই-তোকারি করছেন, তারও নিজস্ব ব্যাখ্যা দিয়েছেন মমতা। তাঁর কথায়, "তুমি থেকে তুইয়ে চলে গেলাম। রাজনৈতিক ভাবে ছোট তো, তাই! ওদের (গুজরাত) সাংসদ ২২টা, আমাদের ৪২টা।"
দলনেত্রীর সুরেই বনগাঁর তৃণমূল প্রার্থী তথা সারা ভারত মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি কপিলকৃষ্ণ ঠাকুরের প্রতিক্রিয়া, "মতুয়াদের সম্পর্কে মোদীর ধারণা নেই। এ সব কে ডি বিশ্বাসের (বনগাঁর বিজেপি প্রার্থী) তত্ত্ব। ২০০৩ সালে কেন্দ্রীয় নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতা করে মতুয়ারা আন্দোলন শুরু করেন। বিজেপি-র করা ওই আইনে ও'পার বাংলা থেকে আসা ২ কোটি মানুষ নাগরিকত্ব হারান। তখন মোদী কোথায় ছিলেন? এত দিন কেন এ সব কথা বলেননি? কাউকে তাড়ানো যাবে না!'' দীর্ঘ দিন মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্গে জড়িত উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক তথা মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, "নির্বাচনের ৪-৫ দিন আগে এ সব বলতে হয়। ১৪ বছর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া মতুয়াদের পাশে কেউ ছিল না।"
বনগাঁর সিপিএম প্রার্থী দেবেশ দাসের প্রতিক্রিয়া, "রাজ্যে প্রচারে এসে মোদী আগে যা বলেছিলেন, তাতে বিজেপি-র ভোট হারানোর সম্ভাবনা ছিল। কে ডি বিশ্বাস নিশ্চয়ই ওঁর কানে সে কথাটা তুলে দিয়েছিলেন। মোদী আজ সেই বক্তব্যেরই ব্যাখ্যা দিলেন।" অন্য দিকে, বিজেপি-র মতুয়া প্রার্থী কে ডি-র বক্তব্য, "রাজ্যে এক কোটিরও বেশি মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ আছেন। চল্লিশ লক্ষের উপরে উত্তরবঙ্গে, বাকিটা দক্ষিণবঙ্গে। ষাট লক্ষেরও বেশি যে মতুয়ারা দক্ষিণবঙ্গে আছে, তাদের প্রায় ৪০%-ই এখনও ভারতের নাগরিকত্ব পাননি। মোদীজি এঁদের কথাই বলেছেন। ক্ষমতায় এলে তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়াই হবে আমাদের প্রধান কাজ।"
মোদীর মন্তব্য নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া মিলেছে মতুয়া-মহলে। একাংশ বলছেন, রেশন-কার্ড, ভোটার পরিচয়পত্র না থাকা বা ভোটার তালিকায় নাম না থাকা নিয়ে তাঁরা দীর্ঘ দিন আন্দোলন করেছেন। মোদী যে আশ্বাস দিয়েছেন, তা বাস্তবায়িত হলে তাঁরা কৃতজ্ঞ থাকবেন। কিন্তু এটা ভোটের চমক কি না, সেই সংশয়ও আছে তাঁদের মনে। মতুয়াদেরই আর এক পক্ষ বলছে, সর্বভারতীয় দলের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী কি জেনে-বুঝে মিথ্যা আশ্বাস দেবেন? এই পক্ষের দাবি, "মোদীর মন্তব্য নিয়েই বিজেপি-কে চাপে ফেলার মতলবে ছিল অন্যেরা। মোদী যা বললেন, তাতে ওঁর আগের কথার ব্যাখ্যা তো হলই। উল্টে বিরোধীদের চাপে ফেললেন উনি!"
প্রসঙ্গত, অনুপ্রবেশ নিয়ে তাঁর আগের কথার স্পষ্ট ব্যাখ্যা এ দিন ফের দিয়েছেন মোদী। বলেছেন, "শরণার্থী যাঁরা, তাঁরা আমাদের পরিবার, আপনজন। তাঁদের দেখভাল আমাদের কাজ। শুধু বাংলা বা অসম নয়, পঞ্জাব, গুজরাত, আমরা সকলে মিলে সামলাব তাঁদের। কিন্তু যাঁরা অনুপ্রবেশকারী, জেনে-বুঝে ভারতে আসছেন, তাঁদের ফিরে যেতে হবে। সুপ্রিম কোর্ট বলেছে অনুপ্রবেশ ভারতের উপরে আক্রমণ, সেটা ঠেকাতে ব্যবস্থা নিতে হবে।"অনুপ্রবেশ থেকে মতুয়া-প্রশ্নে ঢোকার পথে মোদী কিন্তু রেয়াত করেননি তৃণমূল বা বাম কাউকেই। লোকসভায় ২০০৫-র অগস্টে এই অনুপ্রবেশ সমস্যা নিয়েই তৎকালীন তৃণমূল সাংসদ মমতা কী কাণ্ড বাধিয়েছিলেন, মোদী অস্ত্র করেছেন সেই ঘটনাকে। তাঁর বক্তব্য, সে সময় মমতা লোকসভায় বলতে চেয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গে অনুপ্রবেশ সমস্যা গুরুতর। কিন্তু বামেরা এদের ভোটব্যাঙ্ক হিসাবে ব্যবহার করছে এ বিষয়ে তাঁকে বলতে দেওয়া হয়নি বলে স্পিকারের আসনের দিকে কাগজ ছুড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন মমতা। তা উল্লেখ করে মোদীর খোঁচা, "সে দিন ভেবেছিলাম, দিদি সত্যি বাঘিনী! বাংলার জন্য একা লড়ছেন। এখন অন্য কথা বলছেন। কেন? অনুপ্রবেশকারীরা এখন আপনার ভোটব্যাঙ্ক হয়েছে বলে?" মোদীর মন্তব্য, "অনুপ্রবেশ নিয়ে ২০০৫-এর অগস্টে সংসদে আগুন জ্বালিয়ে দিলেন দিদি। ২০১৪-য় দিদির সেই ডায়লগ যেই মোদী বলল, অমনি মোদী অপরাধী হয়ে গেল!"
মমতা অভিযোগও মানতে চাননি। তাঁর জবাব, "আমি নাকি অনুপ্রবেশের সমর্থনে কথা বলেছি! রেশন কার্ডে গাদা ভুয়ো নাম ছিল, যেগুলো বাতিল করতে হবে বলেছিলাম। কংগ্রেস-সিপিএম-বিজেপি আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করেছিল তখন।" মোদীকে মুখ্যমন্ত্রীর কটাক্ষ, "কে অনুপ্রবেশকারী, কিছুই জানে না! ওর মগজে আসলে মরুভূমি!"
সিপিএম এ প্রশ্নে মোদীর খোঁচাকে অস্ত্র করেছে! মোদীর কাঁকুড়গাছির সভার সময়ই হাজরা পার্কে সিপিএমের সভা থেকে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য বলেন, "মোদী হাটে হাঁড়ি ভেঙেছেন! ২০০৫-এ আপনি (মমতা) কী করেছিলেন? তখন তৃণমূল-বিজেপি হাত মিলিয়েছিল। আসলে তৃণমূলের নীতি ক্ষমতায় থাকা।" সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু বলেন, "বাংলাদেশি নিয়ে মোদীর মন্তব্যকে কেন্দ্র করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিতর্ক করছেন। কিন্তু তিনি এনডিএ সরকারের মন্ত্রী থাকার সময় এ নিয়ে টুঁ শব্দটি করেননি। '৭১-এর পরে যাঁরা ও'পার থেকে এসেছেন, তাঁদের বাংলাদেশে পাঠানো নিয়ে যখন বিল পাশ হয়, তখন বাম- কংগ্রেস বিরোধিতা করলেও তৃণমূল সমর্থন করেছিল।" বিমানবাবুর দাবি, "এখন বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল-বিজেপি মক্-ফাইট করছে। এই বিরহ ভোটের পর মিলনে পরিণত হবে!"
মোদী বামেদেরও বাদ দেননি। কেন্দ্রে ফ্রন্ট সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রয়াত সিপিআই নেতা ইন্দ্রজিৎ গুপ্ত ১৯৯৬-৯৭ সালে বলেছিলেন, এখানে এক কোটি বাংলাদেশি আছেন। তা উল্লেখ করে মোদী মনে করিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন বুদ্ধবাবু এক বার বলেছিলেন সীমান্তের মাদ্রাসাগুলি দেশের নিরাপত্তার পক্ষে সন্দেহজনক। বুদ্ধবাবু সেই মন্তব্যের জন্য ভুল স্বীকার করেছিলেন। কিন্তু মোদীর প্রশ্ন, "অনুপ্রবেশ নিয়ে বাম-কংগ্রেস সবাই তো ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতি করেছে। এখন দিদিও করছেন।"
আক্রমণে কাউকে বাদ না দিলেও ভোটব্যাঙ্কের নিরিখেই মমতা যে তাঁর পয়লা নম্বর নিশানা, তা স্পষ্ট মোদীর কথায়। তিনি বলেন, "দিদি এত বদলে যাবেন ভাবিনি! কুর্সির জন্য নিজের আগের কথা ভুলে গেলেন! অনুপ্রবেশকারীরা চাকরি পাচ্ছেন। বাকিরা ভাবুন, এমন চলতে থাকলে আপনারাই না খেয়ে মরবেন!"
যার প্রেক্ষিতে মমতা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, "তুমি বাংলার কাউন্সিলরও নও! তুমি বাংলার কে? বাংলার মানুষকে তাড়িয়ে দেওয়ার অধিকার তোমায় কে দিয়েছে? বাক্সপ্যাঁটরা নিয়ে বাংলার মানুষকে তাড়াবে! বাংলার মানুষই তো তোমায় প্রথম তাড়াবে!"
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment