শহীদদের উদ্দেশে এমন আরও অনেক চিঠি পড়ে শোনানো হলো শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চে। এই চিঠিটি জনতার উদ্দেশে পড়ে শোনান অভিনেত্রী শমী কায়সার।
শাহবাগে সাইবার যুদ্ধ updated their cover photo.
ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা মাস্টার দা সূর্যসেনের সহযোদ্ধো বিনোদ বিহারী চৌধুরী আর নেই।
বুধবার রাত ১০টা ১০মিনিটে বার্ধক্যজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে কলকাতার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ১০৪ বছর।
বিপ্লবীরা মরে নাহ তারা তাদের পদচিহ্নে বেঁচে থাকে সহস্র কাল।তরূন প্রজন্মের উজ্জ্বল দিশারী হয়ে বেঁচে থাক বিনোদ বিহারী চৌধুরীরা।
- 1,680 people like this.
- Akash Bhowmik ৮৬ বছর সংগ্রাম করেও শত্রু মুক্ত দেশটা দেখে যেতে পারলেন না !!! জাতি হিসেবে এ লজ্জা আমরা কোথায় রাখি...........
বুধবার রাতে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় মাস্টারদা সূর্য সেনের অন্যতম শিষ্য বিনোদবিহারীর৷ বয়স হয়েছিল ১০৪ বছর৷ ১৯১০ সালের ২১ জানুয়ারি বিনোদ বিহারীর জন্ম হয় অবিভক্ত ভারতের চট্টগ্রামে৷ মাত্র ১২ বছর বয়সেই তিনি নাম লেখান মাস্টারদার দলে৷ ১৯৩০ সালের ১৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের দিন ব্রিটিশ পুলিশের গুলি তাঁর মুখ ছিঁড়ে দিয়েছিল৷ জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তাঁর গলায় ছিল মাস্টারদার প্রতি অগাধ বিশ্বাস৷ নিজেকে পরিচয়ও দিয়েছেন মাস্টারদার সৈনিক হিসেবেই৷ তাঁর কাছ থেকেই তিনি অস্ত্ররক্ষার দায়িত্ব পেয়েছিলেন৷ তাঁর ভাবাদর্শে অবিচল বিনোদ কখনও সংবর্ধনা নেননি৷ দূরে থেকেছেন আত্মপ্রচার থেকে৷ এই সেদিন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর দেওয়া লাল গোলাপের তোড়াও ফিরিয়ে দিয়েছিলেন সবিনয়ে৷ ১৯৮২-তে হারিয়েছেন বড় ছেলেকে৷ গত বছর চলে গিয়েছেন ছোট ছেলে৷ তবু রক্তঝরা স্মৃতিকে সঙ্গী করে থেকে গিয়েছেন চট্টগ্রামে৷ সহযোদ্ধারা ছেড়ে গিয়েছেন অনেক আগেই৷ বুধবার চলে গেলেন সূর্য সেনের শেষ শিষ্যও৷ বারাসতে থাকে ছোট ছেলের পরিবার৷ কিছুদিন আগে সেখানে এসেছিলেন পুত্রবধূ এবং নাতি-নাতনিদের কাছে৷ অসুস্থতা নিয়ে সম্প্রতি ভর্তি হন ইএম বাইপাসের এক বেসরকারি হাসপাতালে৷ সেখানেই শেষ হয়ে গেল ১০৪ বছরের এক বর্ণময় মহাজীবন৷
শাহবাগের রাজপুত্র ও রাজকন্যারা যখন যুদ্ধাপরাধী অর্থাৎ রাক্ষসের প্রাণভোমরায় হাত দিয়েছে অমনি রাক্ষসরা তাদের স্বমূর্তিতে দাঁড়িয়ে গেছে। তারা তাদের বিশাল দাঁতের ছায়া মূর্তি নিয়ে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে। তারা পুলিশ মারছে। রাজপুত্রদের সেনানী মারছে। আর তাদের সহযোগী হিসেবে কারা দাঁড়িয়েছে? ওই খোক্কসরাই। আজ প্রধান বিরোধীদলীয় নেত্রী তাদের নষ্ট বলে, নাস্তিক বলে ভয় দেখাচ্ছেন। আমরা তো আমাদের রূপকথায় দেখেছি, রাক্ষসদের পালন করে যে বুড়ি, যার কাছে সব রাক্ষসেরা প্রাণভোমরার চাবি রেখে নররক্ত পান করতে বের হয় সে বুড়ির তো এমনি সারা গায়ে গন্ধ। মাথা ভর্তি উকুন। তার মুখ দিয়ে তো বিশ্রী সব শব্দ বের হয়। এখানেও তার বেশি অন্য কিছু হবে না। কিন্তু ওই গন্ধে, ওই উকুনে, ওই বিশ্রী সব শব্দে বীর রাজপুত্ররা কি কখনও ভয় পেয়েছে?
অনেক সময় দেখা যায় রাক্ষস, খোক্কসরা এবং ওই বুড়ি মিলে রাজপুত্রের পথে বড় এক পাহাড় এনে দেয়। ওই পাহাড়কে অনেক উঁচু মনে হয়। অনেক সময় ওই পাহাড়ের গা বেয়ে নকল আগুনের ধারা গড়িয়ে পড়তে থাকে, তার মাথা দিয়ে নকল আগুনের হলকা বের হতে থাকে। কিন্তু বীর রাজপুত্র কি তাতে ভয় পায়? ভয় পায় না। তাছাড়া ওই পাহাড়কে সে বড় মনে করে না। কারণ সারাদেশ তো তার দিকে তাকিয়ে। দেশের তুলনায় ওই পাহাড় আর কত বড়। এই তো কিছু খোক্কস শাহবাগের রাজপুত্রদের ভয় দেখানোর জন্য রাজধানী কাঁপিয়ে গেল। খোক্কসদের মিডিয়া এ নিয়ে মহাউন্মত্ততা শুরু করেছে। বিশাল দেশ। ষোলো কোটি মানুষ। ষোলো কোটি মানুষের ভেতর দুই লাখ কত অংশ? তারা কি বলল তাতেই ভয় পেতে হবে? আমাদের রূপকথার বীর রাজপুত্ররা কিন্তু কখনও ভয় পায়নি। তারা এগিয়ে গেছে। কারণ তারা যাচ্ছে সত্যের পথে। অর্থাৎ রাক্ষসকে মারার পথে। রাক্ষস-খোক্কস তো অন্যায়। সে কোথায় শক্তি পাবে? রবীন্দ্রনাথের কথায় যে অন্যায় করে সে তোমার থেকে ভীরু, তুমি সাহস করে এগিয়ে যাও দেখ সে ভয়ে কিভাবে পালিয়ে যাবে। সেদিন ওরা শাহবাগের দিকে আসতে চেয়েছিল, কয়েকজন তরুণ-তরুণী লাঠি হাতে এগিয়ে যেতেই কী ভয়ে না তারা পালিয়ে গেল। আর এটাই সত্য।
তবে এর বিপরীতে সত্য যদি ভয় পায়, তাহলে কিন্তু সত্য আর সত্য থাকে না।
স্বদেশ রায়,সাংবাদিক ও কলামিস্ট
বুধবার বিকেলে শহরের চিত্রামোড়ে এ নারী সমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়।
বিস্তারিত ১ম কমেণ্টে-
কালো পতাকা মিছিল।
বৃহস্পতিবার শিবিরের অবৈধ হরতালের প্রতিবাদে কালো পতাকা মিছিল করবে গণজাগরণ মঞ্চ।
মিছিলটি শাহবাগ থেকে শুরু হয়ে বাংলামোটর, মগবাজার ঘুরে আবার শাহবাগে ফিরবে।
এ সময় সবার হাতে কালো পতাকা থাকবে।
এছাড়াও পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সারাদিন গণজাগরণ মঞ্চে জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ ও যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে প্রতিবাদী গান এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলবে।
জয় বাংলা।
বৃহস্পতিবার সকালে সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে মহাশ্বেতাদেবী বলেছেন, 'আমি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি৷ এই রকম নিকৃষ্ট মানের উদ্ধত রাজনীতি যাঁরা করেন, তাঁরা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন৷ তাঁদের রাজনীতি আর যার স্বার্থেই হোক জনতার স্বার্থে নয়৷ এটা খুব দুর্ভগ্যের যে পশ্চিমবাংলার মানুষের জন্য অর্থ আনতে গিয়ে দিল্লিতে মমতাদের মার খেতে হল৷' একই সঙ্গে লেখিকা মনে করেন, ৩৪ বছরের বাম শাসনের 'অন্ধকার' থেকে রাজ্যবাসী এখনও যে মুক্ত হতে পারেনি, বিগত ও অতি-সাম্প্রতিক ঘটনা গুলি তারই প্রমাণ৷
প্রবীণ লেখিকার বিবৃতিতে দিল্লি-হামলা পরবর্তী রাজ্যের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির উল্লেখ না থাকলেও, ছিল (নাম উল্লেখ না করে) ছাত্র নেতা সুদীপ্ত গুপ্তর মৃত্যুকে 'দুর্ভাগ্যজনক' বলে উল্লেখ৷ পরে সুদীপ্ত গুপ্ত মৃত্যু প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মহাশ্বেতাদেবী বলেন, 'পুলিশি হেফাজতে কোনও মৃত্যুই সমর্থনীয় নয়৷ রাজ্য সরকারের দায়িত্ব হল দোষী পুলিশ যদি কেউ থাকে তা হলে তাদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়া৷ এখন শুনলাম মুখ্যমন্ত্রী ঘটনার তদন্তে নির্দেশ দিয়েছেন৷' তবে বিগত দু'-তিন দিনে রাজ্যের পরিস্থিতি সম্পর্কে বিশেষ ওয়াকিবহাল নন বলেই দাবি করেছেন প্রবীণ লেখিকা৷ তাঁর কথায়, 'তোমরা যখন বললে তখন এ বিষয়ে অবশ্যই খোঁজ খবর নিয়ে বিবৃতি দেব আমি৷' তবে, একইসঙ্গে রাজ্যে প্রতিদিন ঘটে চলা বদলা ও হিংসাত্মক রাজনীতির অভ্যেস যে রাজ্যবাসীকে বদলাতে হবে তা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানিয়ে দেন তিনি৷ পাশাপাশি, রাজ্যে হিংসার বাতাবরণ ঘোচাতে রাজ্যপাল বা কোনও রাজনৈতিক দলের আহ্বানে সমস্ত রাজনৈতিক দলের আলোচনায় বসা উচিত বলেও মনে করেন মহাশ্বেতাদেবী৷
বুধবার প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে শাসক দলের ছাত্রদের তাণ্ডব চালানোর ঘটনারও তীব্র বিরোধ করেন অরণ্যের অধিকারের লেখিকা৷ তাঁর কথায়, 'প্রেসিডেন্সি আমাদের রাজ্যের অগ্রণী বিশ্ববিদ্যালয়৷ সেখানে তৃণমূলের পতাকা হাতে তাণ্ডব চালানো অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা৷ এসব করে আমাদের রাজ্যের নাম যে খুব একটা উজ্জ্বল হবে, তা নয়৷ যেই এটা করে থাকুন তা অত্যন্ত অন্যায় কাজ হয়েছে৷' শিক্ষাক্ষেত্রকে রাজনীতি মুক্ত করা যাবে কি না, সে বিষয়ে প্রবীণ লেখিকার সন্দেহ থাকলেও, রাজনীতিকদের হাতে ছাত্ররা যে বারংবার ব্যবহূত হয়েছে তা মনে করেন তিনি৷ রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে রাজ্য সরকার ও নির্বাচন কমিশনের মধ্যে চলা দ্বৈরথ প্রসঙ্গে এদিন মহাশ্বেতাদেবী বলেন, 'পঞ্চায়েত নির্বাচন অনিশ্চিত হওয়াটা খুব খারাপ৷ মানুষের স্বার্থেই এই নির্বাচন প্রতি পাঁচ বছর অন্তর হওয়া উচিত৷'
রাউজান বাসীর স্মৃতির আয়নায় চিরদিন জাগ্রত থাকবে বিপ্লবী বিনোদ বিহারী চৌধুরী
শফিউল আলম, রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি/আরঃরাউজানের স্মৃতি হয়ে চির বিদায় নেওয়া মাস্টার দা সূর্য সেনের অগ্র সৈনিক বিল্পবী বিনোদ বিহারী চৌধরী। না ফেরার পথের যাত্রী মহান বিল্পবীর চির বিদায়ে রাউজান বাসী হারিয়েছে অকৃত্তিম দেশ প্রেমীক এক বন্ধুকে। শোকে মুহ্যমান মাস্টার দার প্রিয় জম্মভূমি রাউজানের মাটি ও মানুষ । স্মৃতি ধন্য মাস্টার দার পূর্ণ ভূমি রাউজানে নারীর টানে বার বার এসে ছিল বিল্পবী বিনোদ বিহারী চৌধুরী । মৃত্যুর আগে গত ১২ জানুয়ারী শেষ বারের মতো মাস্টার দার ম্যুরাল, তোরণ ও মাস্টার দা সূর্য সেন চত্তর উদ্ধোধন করতে এসে ছিলেন রাউজানে। রাউজানে এই মহান বিল্পবীর আগমনে সেই দিন ল মানুষের হৃদয় র্স্পশ করে ছিল। মায়ার জালে আবদ্ধ করে নিল এই বিল্পবী। প্রবীন বিল্পবী বিনোদ বিহারীর মহাপ্রানের সংবাদ রাউজানসহ সমগ্রহ দেশে ছড়িয়ে পড়লে স্মৃতির আয়নায় আবেগ আপ্লুত স্থানীয় এমপি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী। বিনোদ দার মনোবল ও প্রত্যাশা ছিল মাস্টার স্মৃতি রায় ফজলে করিম এমপি এগিয়ে আসবে। আর এই প্রত্যাশা পূরণে এমপি সাহেব কথা দিয়ে ছিল বিনোদ দাকে। আর তা অরে অরে পালন করেছে তিনি। মৃত্যুর পূর্বে সেই স্থাপনা নিজ চোখে দেখে গেলেন ১০৪ বছর বয়সী প্রবীন বিল্পবী বিনোদ দা। তবে দেখে যেতে পারেনি মাস্টার দার নামে রাউজানে নির্মিত সূর্য সেন সরকারী প্রথমিক বিদ্যালয়টি। শেষ ইচ্ছা ছিল কোন এক সময়ে বিদ্যালয়টি উদ্ধোধন করতে রাউজান আসবে। বয়সের ভারাক্রান্তে চিকিৎসার রত অবস্থায় না ফেরার দেশে চলে গেলেন তিনি। উল্লেখ্য যে, রাউজানে মাস্টার দা'র স্মৃতি রায় নবনির্মিত সূর্যসেন চত্বর, তোরণ ও ভাস্কর্য'র উদ্বোধন করেছিল গত ১২জানুয়ারী বিপ্লবী বিনোদ বিহারী। ফলক উন্মোচন করে বিনোদ বিহারি বলে ছিলেন নতুন প্রজন্মকে চরিত্রবান, ত্যাগ, সৎ ও সত্যের পথে চলে অন্ধকারকে দূর করে আলো জ্বালাতে। তাতেই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে।
পরে ওই দিন রাউজান কলেজে কেক কেটে বিপ্লবী বিনোদ বিহারীর ১০৪তম জন্ম বার্ষিকী পালন করা হয়।
http://www.banglapost24.com/archives/112761
কৃতজ্ঞতাঃ অমি রহমান পিয়াল
Omi Rahman Pial
নিশ্চিন্তে আছেন ?? থাকুন। কাল আপনার ফ্যাক্টরি পোড়ানো হবে। নিশ্চিত জেনে রাখুন। এখনি সময়, ঘুম ভেংগে তরুনদের দাবীর সাথে রাজপথে আসুন, না হয় এভাবেই পুড়বে আপণার ভবিসষ্যত।
শতবর্ষে বিপ্লবী বিনোদ বিহারী চৌধুরীর প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা
"মাস্টারদা সবাইকে ডেকে যার যার দায়িত্ব বুঝিয়ে ছড়িয়ে পড়তে বললেন। আমি সহ আরো জন-দশেকের দায়িত্ব ছিল দামপাড়া পুলিশ লাইনের আশপাশে রাত ১০ টার মধ্যে উপস্থিত থাকা। আমারা যথাসময়ে মিলিটারী পোশাক পরে উপস্থিত হলাম। সঙ্গে ছিল দুখানা শাবল, আলমারি ভাঙার জন্য। কথা ছিল রাত ১০টায় আরেক গ্রুপ পাহাড়ে উঠে প্রহরীদের আটক করবে এবং বন্দে মাতরম' চিত্কার করবে। এই চিত্কারের সঙ্গে সঙ্গে আমরা যারা জঙ্গলের চারদিকে ছিলাম তারাও একযোগে বন্দে মাতরম বলে চিত্কার করে পাহাড়ে পৌছাব। দুরু দুরু বুকে অপেক্ষা করছি। তখনো জানি না আমাদের মিশন কতটুকু সফল হবে। জীবনের প্রথম এ ধরনের একটি অপারেশন করছি। এমন সময় হঠাত্ করে ওপর থেকে বন্দে মাতরম চিত্কার শুনলাম। সঙ্গে সঙ্গে আমরা যারা জঙ্গলে ছিলাম তারা একযোগে বন্দে মাতরম চিত্কার দিয়ে পাহাড়ের ওপরে উঠে পড়লাম। শত্রুরা আমাদের চিত্কার শুনে ভাবল, আমরা হয়তো সংখ্যায় অনেক। ফলে তারা ভয়ে পালালো। পুলিশ লাইনের ভেতরে ঢুকে শাবল দিয়ে আলমারি ভেঙে রাইফেল, বারুদ নিয়ে নিলাম। আর যা প্রয়োজন হবে না তাতে আগুন লাগিয়ে দিলাম। সে দিন আমারা সবাই যার যার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেছিলাম বলেই পুলিশ লাইন আক্রমণ সফল হয়েছিল। আমাদের হাতে প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র এসেছিল, যা পরে জালালাবাদ যুদ্ধে কাজে লাগানো হয়।" এক সাক্ষাতকারে ব্রিটিশ আমলে চট্টগ্রামের বিখ্যাত অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের অভিজ্ঞতা এভাবেই বর্ণনা করছিলেন বিপ্লবী বিনোদ বিহারী চৌধুরী।
অকুতোভয় এই বিপ্লবীর আজ শততম জন্মবার্ষিকী। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, প্রণাম, স্যালুট সবকিছু। শুভ জন্মদিন বিপ্লবী। বিপ্লব দীর্ঘজীবী হউক।
১৯১১ সালের ১০ জানুয়ারী চট্টগ্রাম জেলার বোয়ালখালি থানায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। রাঙামাটি বোর্ড স্কুল, করোনেশন উচ্চ বিদ্যালয়, পি.সি সেন সারোয়ারতলি উচ্চ বিদ্যালয়, চিটাগাং কলেজে পড়াশোনার পর যান কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। বন্দী থাকা অবস্থায় প্রথম শ্রেণীতে আই.এ এবং বি.এ পাশ করেন। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই তাঁর অন্তরে বিপ্লব ছিলো।
বাবা কামিনী কুমার চৌধুরী ছিলেন পেশায় উকিল। অসহযোগ আন্দোলনের অন্যতম কর্মী কামিনী কুমার বিলেতি কাপড় ছেড়ে খদ্দরের কাপড় পরা শুরু করেন, বিনোদ বিহারীকেও তাই পরতে দিতেন। ১১ বছর বয়সের বালক তখন থেকেই দীক্ষা পায় বিপ্লবের।
১৬ বছর বয়সে এক দিন বিপ্লবী রামকৃষ্ণের সঙ্গে বিনোদ বিহারীর পরিচয় হয়। সেখান থেকেই বিপ্লবের শুরু। এর দু-তিন মাসের মধ্যেই তিনি মধুসূদন দত্ত, তারকেশ্বর দস্তিদরের মতো আরো কয়েকজন বিপ্লবী নেতার সান্নিধ্যে আসেন।
বিনোদবিহারী চৌধুরী যখন বিপ্লবী দলে ঢোকেন তখন মাস্টারদা সূর্যসেন জেলে। ১৯৪২ সালে ভারত আইনে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তিনি। ৪৮' সালের শেষের দিকে মাস্টারদা জেল থেকে ছাড় পান। ১৯২৯ সালে প্রথম দেখা হয় মাস্টারদার সঙ্গে। অল্প দিনেই বিনোদবিহারী চৌধুরী মাস্টারদা সূর্যসেনের স্নেহভাজন হয়ে উঠেছিলেন। ১৯৩০ সালের ঐতিহাসিক অস্ত্রাগার লুন্ঠনে বিনোদবিহারী চৌধুরী তাই হতে পেরেছিলেন সূর্যসেনের অন্যতম তরুণ সহযোগী। বিপ্লবী দলের সর্বাধিনায়ক মাস্টারদা ১৮ এপ্রিলকে চারটি এ্যাকশন পর্বে ভাগ করেছিলেন। প্রথম দলের দায়িত্ব ছিল ফৌজি অস্ত্রাগার আক্রমণ, দ্বিতীয় দলের ছিল পুলিশ অস্ত্রাগার দখল, তৃতীয় দলের ছিল টেলিগ্রাফ ভবন দখল, চতুর্থ দলের ছিল রেললাইন উত্পা টন। বিনোদবিহারী চৌধুরী ছিলেন পুলিশ অস্ত্রাগার দখল করার গ্রুপে। এই অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের অভিজ্ঞতার কথা শুরুতেই বলা হয়েছে।
মাস্টারদার নেতৃত্বে এই বিনোদ বিহারীরাই সবার আগে চট্টগ্রামের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। ১৯৩০ সালের ১৮ এপ্রিল রাতে চট্টগ্রামে ব্রিটিশ শাসকের সব ঘাঁটির পতনের পর মাস্টারদার নেতৃত্বে চট্টগ্রামে স্বাধীনতা ঘোষণা করা হয়। এক সাক্ষাতকারে তিনি জানান- "১৮ এপ্রিল রাতে চট্টগ্রামে ব্রিটিশদের মূল ঘাঁটিগুলোর পতন ঘটিয়ে মাস্টারদার নেতৃত্বে শহর আমাদের নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। নেতা-কর্মীরা দামপাড়া পুলিশ লাইনে সমবেত হয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে এবং মাস্টারদাকে প্রেসিডেন্ট ইন কাউন্সিল, ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মি, চিটাগাং ব্রাঞ্চ বলে ঘোষণা করা হয় এবং রীতিমতো মিলিটারি কায়দায় কুচকাওয়াজ করে মাস্টারদা সূর্যসেনকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। তুমুল 'বন্দে মাতরম' ধ্বনি ও আনন্দ-উল্লাসের মধ্যে এ অভিষেক অনুষ্ঠিত হয়।"
জালালাবাদ যুদ্ধ ছিল বিনোদবিহারী চৌধুরীর প্রথম সম্মুখযুদ্ধ। সেদিন তিনি ব্রিটিশ সৈন্যদের বিরুদ্ধে লড়েছিলেন অসীম সাহসিকতায়। গলায় গুলিবিদ্ধ হয়েও লড়াই থামাননি। চোখের সামনে দেখেছিলেন ১২ জন সহকর্মীর মৃত্যু। "আমরা দলে ছিলাম ৫৪ জন, পাহাড়ে লুকিয়ে আছি, তিন দিন কারো পেটে ভাত পড়েনি। পাহাড়ি গাছের দু-একটি আম খেয়ে দিন পার করেছি। এ কারণে বিপ্লবীদের মধ্যে চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। এর মধ্যেই একদিন বিকেলে অম্বিকাদা কীভাবে যেন বড় এক হাঁড়ি খিচুড়ি নিয়ে হাজির হলেন। আমরা তো অবাক। ওইদিন সেই খিচুরি আমাদের কাছে মনে হয়েছিল অমৃত।"
"এর আগে অস্ত্রাগারে আগুন লাগাতে গিয়ে হিমাংশু সেন বলে এক বিপ্লবী অগ্নিদগ্ধ হয়। তাঁকে নিরাপদ স্থানে রাখার জন্য অনন্ত সিংহ ও গনেশ ঘোষ, আনন্দ গুপ্ত ও মাখন ঘোষাল দামপাড়া ত্যাগ করে। এ ঘটনার পর তত্কা লীন চট্টগ্রাম জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সমুদ্র বন্দরের বিদেশী জাহাজ থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করে সৈন্য নিয়ে আমাদের আক্রমণ করে৷ কিন্তু লোকনাথ বলের নেতৃত্বে একদল বিপ্লবী তার যোগ্য জবাব দিয়েছিল। এদিকে অনন্তদা ও গণেশদা হিমাংশুকে রেখে ফিরে না আসাতে মাস্টারদা অন্যান্যের সঙ্গে পরামর্শ করে দামপাড়া ছেড়ে নিকটবর্তী পাহাড়ে আশ্রয় নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ২১ এপ্রিল তারিখেও তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ না হওয়াতে শেষ রাতের দিকে পুনরায় শহর আক্রমণের উদ্দেশ্যে আমরা ফতেয়াবাদ পাহাড় হতে রওনা হই। মাস্টারদা আমাদের ডেকে বললেন, আমরা যেকোন প্রকারেই আমাদের কর্মসূচি পালন করব। শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত হলো ভোর রাতে চট্টগ্রাম শহর আক্রমণ করা হবে। বিনোদবিহারী চৌধুরীরা ফতেয়াবাদ পাহাড় থেকে সময়মতো শহরে পৌঁছাতে পারলেন না। ভোরের আলো ফোটার আগেই তাঁদের আশ্রয় নিতে হলো জালালাবাদ পাহাড়ে। ঠিক করা হলো রাতের বেলা এখান থেকেই শহরে ব্রিটিশ সৈন্যদের অন্যান্য ঘাটি আক্রমণ করা হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্য বিপ্লবীদের, গরু-বাছুরের খোঁজে আসা রাখালরা মিলিটারি পোশাক পরিহিত বিপ্লবীদের দেখে পুলিশে খবর দেয়। ওই রাখালদের দেখেই সূর্যসেন প্রমাদ গুনেছিলেন৷ তখনই তিনি ধারণা করেন শত্রুর সংগে সংঘর্ষ অনিবার্য। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে তার আশংকা বাস্তব হলো। মাস্টারদা লোকনাথ বরকে আসন্ন যুদ্ধ পরিচালনার দায়িত্ব দিলেন।"
"লোকনাথদা যুদ্ধের একটি ছক তৈরি করেছিলেন। আমাদের কয়েকজনের দায়িত্ব ছিল ত্রিশাল আক্রমণের। যাতে শত্রু কোনক্রমে পাহাড়ে উঠে আসতে না পারে সেজন্য আমাদের যুদ্ধকৌশল কী হবে তা বলে দিলেন। বেলা ৪ টা নাগাদ পাহাড় থেকে দেখলাম সৈন্যবোঝাই একটি ট্রেন জালালাবাদ পাহাড়ের পূর্ব দিকে থামল। ডাবল মার্চ করে ব্রিটিশ সৈন্যরা পাহাড়ের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। কাছে আসার সঙ্গে সঙ্গে দু'পক্ষের তুমুল যুদ্ধ শুরু হলো। শত্রুরা কিছুতেই পাহাড়ের ওপর উঠতে পারছিল না। তারা আমাদের দিকে বৃষ্টির মতো গুলি করছিল। আর আমাদের তেমন কোনো অস্ত্রও ছিল না। এ ছিল এক অসমান যুদ্ধ। এই যুদ্ধে প্রথম শহীদ হলেন হরিগোপাল বল নামে ১৫ বছরের এক বিপ্লবী। শহীদের রক্তে জালালাবাদ পাহাড় সিক্ত হলো। কিছুক্ষণ পরেই দেখতে পেলাম আরেক বিপ্লবী বিধু গুলিবিদ্ধ হয়ে পড়ে যাচ্ছে। মারা যাওয়ার আগে বিধু বলল, 'নরেশ আমার বুকেও হাদাইছে একখান গুলি। তোরা প্রতিশোধ নিতে ছাড়বি না।' বিধু ছিল মেডিকেল স্কুলের শেষে বর্ষের ছাত্র, খুব রসিক। মারা যাওয়ার আগেও তার রসিকতা কমেনি। একে একে নরেশ রায়, ত্রিপুরা সেনও শহীদ হলো। হঠাত্ করে একটা গুলি এসে আমার গলার বাঁ দিকে ঢুকে ডান দিকে বেরিয়ে গেল৷ দু হাতে গুলি ছুঁড়ছিলাম। এক সময় অসহ্য যন্ত্রণায় জ্ঞান হারালাম।" ঘন্টাখানেক অচৈতন্য থাকার পর বিনোদবিহারী চৌধুরী দেখলেন শত্রু-সৈন্যরা সব পালিয়ে গেছে। গলার মধ্যে তখন অসহ্য যন্ত্রনা। ফোঁটা ফোঁটা রক্ত ঝরছে। পরনের লেঙ্গুট খুলে বিপ্লবীরা তার গলায় ব্যান্ডেজ করে দিল। মাস্টারদা সিদ্ধান্ত নিলেন জালালাবাদ পাহাড় ছেড়ে অন্য পাহাড়ের ঘন জঙ্গলে রাতের মতো আশ্রয় নেবেন। পরবর্তীতে কর্মসূচি হবে গেরিলা যুদ্ধ।
"আমার ধীরগতি চলার কারণেই একসময় মাস্টারদার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লাম। তখন লোকনাথদার সাথে আলাপ করে সিদ্ধান্ত নেয়া হলো শহরের আশপাশ থেকে গ্রামের ভেতরে প্রবেশ করব সবাই। প্রায় গ্রামে আমাদের দলের ছেলেরা রয়েছে। সেখানে গোপন আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হবে। লোকদা আমাদের নির্দেশ দিলেন, অপরাহ্ণ পর্যন্ত ধানক্ষেতে লুকিয়ে থাকতে। বিকেল ৪টার দিকে ধানক্ষেত থেকে বের হয়ে আবার হাঁটা ধরলাম। গলায় প্রচন্ড ব্যথা। ক্ষণে ক্ষণে রক্তপাত হচ্ছিল। এক সময় লোকদাকে বললাম-আমি অত্যন্ত দুর্বল বোধ করছি। আমার জন্য আপনাদের পথ চলতে খুব অসুবিধা হচ্ছে। আমাকে রেখে আপনারা চলে যান। লোকদা বললেন, 'এই অবস্থায় তোমাকে কীভাবে ফেলে যাব।' আমরা যেখানে দাঁড়িয়েছিলাম তার ৪ মাইলের মধ্যেই কুমিরা। তখন ছোট কুমিরা গ্রামে আমার খুড়তুত ভাইয়ের শ্বশুরবাড়ি। জেঠাশ্বশুর ছিলেন ইউনিয়ন বোর্ডের প্রেসিডেন্ট। সেখানেই আমি আশ্রয় নিলাম।" খুড়তুত ভাইয়ের শ্বশুরবাড়িতে বিনোদবিহারী চৌধুরীর চিকিত্সাব চলে দীর্ঘদিন। তাদের আদর-যত্নে তিনি সুস্থ হয়ে উঠেন এক সময়।
"এরই মধ্যে গান্ধীজির নেতৃত্বে ভারতের সর্বত্রই লবণ আইন ভঙ্গ আন্দোলন শুরু হয়। কুমিরাতেও কংগ্রেস স্বেচ্ছাসেবকদের শিবির স্থাপিত হলো। ফলে আশ্রয়স্থল হারাতে হলো। "আন্দোলন দমনের জন্য গ্রামে পুলিশ বাহিনী ক্যাম্প করে। আর এতে শঙ্কিত হয়ে পড়েন আশ্রয়দাতারা। ঠিক করা হলো, এখান থেকে আমাকে সরিয়ে ফেলা হবে। কারণ আমি এখানে ধরা পড়লে বাড়ির সবাইকে বিপ্লবীকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে জেলে পচতে হবে। সমস্যা হলো কীভাবে পালাই। সে সময় আমার বৌদি বাপের বাড়িতে এসেছেন। তাকে পাঠানো হবে চট্টগ্রামের চাকতাই। বৌদির সঙ্গে পরামর্শ করে ঠিক করলাম আমিও বউ সাজব। লাল পাড়ের শাড়ি হাতে শাঁখা ও চুড়ি পরে বউ সাজলাম। বিকেল নাগাদ পৌছে গেলাম চাকতাই। পথে দুবার সৌভাগ্যক্রমে পুলিশ বেষ্টনী পার হয়ে চলে এসেছিলাম।"
কিন্তু এভাবে পালিয়ে বেশিদিন থাকতে পারলেন না। তাঁকে জীবিত বা মৃত ধরে দেওয়ার জন্য ৫০০ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। শেষ পর্যন্ত ১৯৩৩ সালের জুন মাসে ব্রিটিশ সরকারের হাতে বিনোদবিহারী চৌধুরী গ্রেপ্তার হন। কোনো সাক্ষ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করতে না পারলেও বেঙ্গল ক্রিমিনাল ল অ্যামেন্ডমেন্ট এ্যাক্টে চিটাগাং জেল, কলকাতা প্রেসিডেন্সি জেল, দিউলি ডিটেনশান জেল এবং বাহরামপুর জেলে বিনা বিচারে পাঁচ বছর কারারুদ্ধ রাখা হয় তাঁকে। এরপর তিনি ১৯৩৮ সালে মুক্তি পান কিন্তু এটি তার প্রকৃত মুক্তি ছিল না৷ তিনি পরের এক বছর বাড়িতেই বন্দী জীবন কাটান৷ ১৯৩৯ সালে তিনি প্রকৃত মুক্তি লাভ করেন৷ ১৯৪১ সালের মে মাসে গান্ধীজীর ভারত ছাড় আন্দোলনে যোগদানের প্রস্তুতিকালে আবার গ্রেপ্তার হন তিনি এবং চিটাগাং জেল, হিজলি বন্দী শিবির, ঢাকা জেল ও খকশি বন্দী শিবিরে তাঁকে আটক রাখা হয়৷ ছাড়া পান '৪৫ সালের শেষের দিকে।
এরই মধ্যে ১৯৩০ সালে কংগ্রেস চট্টগ্রাম জেলা কমিটি সহ-সম্পাদক, ৪০-৪৬ বঙ্গীয় প্রাদেশিক কংগ্রেস নির্বাহী কমিটির সদস্য হন। আর এরই মধ্যে ১৯৩৪ সালের ১২ জানুয়ারী বীর বিপ্লবী সূর্যসেনকে চট্টগ্রাম কারাগারে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করে বৃটিশ শাসক গোষ্ঠী। ৪৬ সালে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক, চট্টগ্রাম জেলা কমিটি, ১৯৪৭ সালে ৩৭ বছর বয়সে পশ্চিম পাকিস্তান কংগ্রেসের সদস্য হন তিনি।
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের সময় তিনি রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা। তিনি তখন আইনসভার সদস্য। ২১ ফেব্রুয়ারি তিনি আইন পরিষদে যাবার আগে মেডিকেল কলেজে গিয়ে দেখে আসেন বরকতের লাশ। সেদিনই এই বর্বরতার বিরুদ্ধে অ্যাসেম্বলিতে কঠোর প্রতিবাদ করেন তিনি।
১৯৫৮ সালে আইয়ুব খান সামরিক আইন জারির মাধ্যমে সব রাজনৈতিক দলকে বেআইনি ঘোষণা করলে রাজনীতি থেকে অবসর নেন তিনি। কিন্তু বিপ্লব তাঁকে ছাড়েনি। '৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ শুরু হলে পাকিস্তান সরকার সিকিউরিটি এ্যাক্ট অনুযায়ী বিনোদবিহারী চৌধুরীকে বিনা বিচারে এক বছর কারাগারে আটকে রাখে।
১৯৭১ সালে চট্টগ্রাম থেকে পালিয়ে ভারতে গিয়ে তরুণ যোদ্ধাদের রিক্রট করে ট্রেনিংয়ে পাঠিয়েছেন বিনোদ বিহারী। মুক্তিযুদ্ধের সময় রাইফেল হাতে নিতে পারেননি বটে কিন্তু ক্যাম্পে ক্যাম্পে গিয়ে তরুণ মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রাণিত করেছেন৷সংগঠন করেছেন মুক্তিযুদ্ধ।
মাঝে তিনি ১৯৩৯ সালে দৈনিক পত্রিকার সহকারী সম্পাদক হিসাবে তাঁর কর্ম জীবন শুরু করেন৷ এরপর ১৯৪০ সালে চট্টগ্রাম কোর্টের একজন আইনজীবী হিসাবে অনুশীলন শুরু করেন৷ কিন্ত অবশেষে তাঁর দীর্ঘ ক্যারিয়ার জীবনে শিক্ষকতাকেই তিনি পেশা হিসাবে গ্রহণ করেন৷প্রবর্তক বিদ্যাপীঠ, সাধারণ ব্রাহ্ম সমাজ, মাস্টারদা সূর্যসেন স্মৃতির, জালালাবাদ স্মৃতি সমিতিসহ আরো বেশকিছু সংগঠনের সভাপতি হিসাবে দ্বায়িত্ব পালন করছেন এবং নিয়মিত এসব সংগঠনের সভা-সমিতি, মিটিং করছেন। এখনও করে যাচ্ছেন। কিছুদিন আগেও তিনি ওয়াদ্দেদারের স্মৃতিধন্য চট্টগ্রাম নগরীর ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ অপর্ণাচরণ ও কৃষ্ণ কুমারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় রক্ষার জন্য অনশন করলেন। এখনো মাথায় যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবীতে ব্যান্ডেনা পরে রাস্তায় নামেন। এক সাক্ষাতকারে তিনি জানান- "আমি বিশ্বাস করি এই বয়সেও আমি জাতির উপকারে আসতে পারি৷ হতে পারি জাতির পথ প্রদর্শক৷ শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করার আগ মুহুর্ত পর্যন্ত আমি আমার মূলনীতি সমূহ প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করে যাব৷ জাতির জন্য অবিরাম কাজ করব৷ আমি দেখতে পাচ্ছি আমার দেশের জনগন অত্যাচারিত হচ্ছে৷ তাদের উপর অন্যায় চলছে৷ তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি নিগৃহীত লাঞ্চিত জনগনের জন্য আমাকে আবার যুদ্ধ করতে হবে এবং আরো কঠিন সংগ্রাম করতে হবে৷ কেউ আমার পথ রোধ করতে পারবে না৷ কোন অশুভ শক্তি আমাকে থামাতে পারবে না"
১৯৪০ সালে বিনোদ বিহারী চট্টগ্রাম কোর্টের আইনজীবী কিরন দাশের মেয়ে বিভা দাশকে বিয়ে করেন। বিভা দাশ চট্টগ্রামের মানুষের কাছে বেলা চৌধুরী নামেই সমধিক পরিচিত। সম্প্রতি বিভা দাশ পরলোক গমন করেছেন।
২০০০ সালে বাংলাদেশ সরকার তাঁকে স্বাধীনতা পদকে ভূষিত করেন।
বিপ্লবী বিনোদ বিহারী ক্ষুধা ও দারিদ্রমূক্ত একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেন। তার শততম জন্ম দিনে এটাই তার আকাঙ্খা, দেখে যেতে চান স্বপ্নের বাস্তবায়ন। সেই অপেক্ষাতেই আছেন তিনি।
নাম : শ্রী বিনোদবিহারী চৌধুরী
পিতা :স্বর্গীয় কামিনীকুমার চৌধুরী
মাতা : স্বর্গীয়া রামা চৌধুরী
জন্ম : তারিখ ১০ জানুয়ারী (১৯১১)
স্ত্রী : বিভা চৌধুরী (বেলা)
ছেলে : বিবেকান্দ্র চৌধুরী
তথ্য কৃতজ্ঞতা: হিমেল চৌধুরী
http://www.amrabondhu.com/lokenbosh/216
কার্টেসি টু -অপু রায়হান।
হরতাল মোটামুটি শান্তিপূর্ণ হলেও পেট্রোল বোমা বিস্ফোরণ ও গুলি চলার মতো ঘটনা পুরোপুরি এড়ানো যায়নি৷ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ছ'টা নাগাদ যাত্রাবাড়ির মীরহাজিরবাগ নতুন রাস্তায় শিবিরকর্মীরা চলন্ত একটি বাসে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়৷ যাত্রীরা তাড়াতাড়ি বাস খালি করে নেমে আসায় অপ্রীতিকর কোনও ঘটনা ঘটেনি৷ তবে ইঁটের ঘায়ে আহত হয়েছেন এক যাত্রী৷ অভিযুক্ত সন্দেহে আটক করা হয়েছে এক হরতাল সমর্থককে৷
হরতালের দিন সকালে রায়েরবাগ এলাকায় ঝটিকা মিছিল বার করে শিবিরকর্মীরা৷ তারা ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়কে তিনটি পেট্রোল বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়৷ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে গুলি ছোড়ে পুলিশ৷ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে দু'টি পেট্রোলবোমা৷ পুরোনো ঢাকার সদরঘাট এলাকাতেও বেশ কয়েকটি পেট্রোলবোমা বিস্ফোরণ ঘটে৷ পুলিশের ছোড়া গুলিতে আহত হয়েছে দুই হরতাল সমর্থক৷ তিন জনকে আটক করেছে পুলিশ৷
জিন্দাবাহার এলাকাতেও হরতালের সমর্থনে মিছিল বের করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রশিবির৷ মিছিল থেকে পুলিশকে লক্ষ করে দু'টি পেট্রোল বোমা ছোড়া হয়৷ তবে হতাহতের কোনও ঘটনা ঘটেনি৷ লক্ষ্মীবাজার এলাকায় হরতাল সমর্থকরা বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে৷ এ দিন সকাল সাড়ে ছ'টা নাগাদ মিরপুরের প্রশিকা ভবনের সামনে মিছিল বের করে শিবিরকর্মীরা৷ টায়ার জ্বালানোর চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়৷ উদ্ধার হয়েছে বেশ কয়েকটি পেট্রোল বোমা৷
অন্য দিকে, ইসলামী ছাত্রশিবিরের ডাকা এই হরতালের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার কালো পতাকা নিয়ে মিছিল করে গণজাগরণ মঞ্চ৷ দুপুর সোয়া বারোটা নাগাদ শুরু হওয়া এই মিছিলটিতে অংশ নেন বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ৷ ঘণ্টাখানেক বাদে মিছিলটি মগবাজার থেকে শাহবাগে ফিরে আসে৷ গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার জানান, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ১৪ এপ্রিল শাহবাগে দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে৷ এই সমাবেশে সকলকে অংশগ্রহণের জন্য অনুরোধ জানান তিনি৷
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অপরাধে দণ্ডিত কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন সাজার রায় প্রত্যাখ্যান করে চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে আন্দোলন শুরু করেছে গণজাগরণ মঞ্চ৷ মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ দণ্ড এবং জামাত শিবির নিষিদ্ধ করা-সহ ছ'দফা দাবি আদায়ে নানাবিধ কর্মসূচি পালন করে আসছেন তাঁরা৷
http://www.anandabazar.com/archive/1130411/11cal1.html
মমতার আবেদন উড়িয়ে রাজ্য জুড়ে দলের হামলা অব্যাহত
মুখ্যমন্ত্রীর আবেদন উপেক্ষা করেই এ দিনও জেলায় জেলায় তাঁর দলের সমর্থকেরা একের পর এক সিপিএম পার্টি অফিসে হামলা চালিয়েছে, আগুন জ্বালিয়েছে, নেতাদের মারধর করেছে৷ বহু পার্টি সমর্থকদের বাড়িতেও আগুন দেওয়া হয়েছে৷ উঠেছে বোমাবাজি, গুলি চালানোর অভিযোগও৷ এমনকী সিপিএম নেতার কাকা হওয়ার অপরাধে কাকদ্বীপের এক ফল ব্যবসায়ীর হাত-পা বেঁধে ব্লেড দিয়ে মাথা কামিয়েও দেওয়া হয়েছে৷ জয়দেব দাস নামে ওই ব্যক্তিকে মাথায় ঘোল ঢেলে বাজারে ঘোরানো হয়৷ তিনি অসুস্থতার কথা বললেও কাঠফাটা রোদে তাঁকে বসিয়ে রাখা হয়৷ শেষে তিনি জ্ঞান হারালে বাজারের মধ্যেই তাঁকে ফেলে তৃণমূল সমর্থকেরা পালায়৷
শিলিগুড়িতে তৃণমূল-সিপিএম সংঘর্ষ হয়েছে৷ সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে পুলিশ বেপরোয়া লাঠি চালায়৷ পুলিশের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ হন মন্ত্রী গৌতম দেব৷ তার পরই রাতে তড়িঘড়ি জেলা পার্টি অফিস থেকে প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য এবং সিপিএমের জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকারকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়৷ গ্রেপ্তার করা হয় মোট ৫২ জন নেতা-কর্মীকে৷ রাতে অশোকবাবু এবং জীবেশবাবুকে চলে যেতে বললেও তাঁরা দাবি করেন, ধৃত সকলকে না-ছাড়লে কেউ থানা ছেড়ে যাবেন না৷ থানায় অশোকবাবুদের সঙ্গেই আছেন রাজ্যসভার সদস্য সুমন পাঠক৷ শিলিগুড়িতে সংঘর্ষের ঘটনায় দুই পুলিশকর্মী-সহ ২২ জন আহত হয়েছেন৷ বৃহস্পতিবার বামফ্রন্ট ১২ ঘন্টার দার্জিলিং জেলা বন্ধের ডাক দিয়েছে৷
এ দিন একাধিক জেলায় মন্ত্রীদের নেতৃত্বেও হামলা চলে বলে প্রধান বিরোধী দলের অভিযোগ৷ আগের দিনের মতো বুধবারও পুলিশ ছিল নির্বাক দর্শক৷ শাসক দলের কাউকেই কিন্ত্ত বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এ-সব ঘটনার কোনও নিন্দা করতে শোনা যায়নি৷ মহাকরণে স্বরাষ্ট্রসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের এই পরিস্থিতি সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করতে চাননি৷ তবে স্বরাষ্ট্র দপ্তরের এক মুখপাত্র জানান, সব জেলার পুলিশ সুপারকে পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে বলা হয়েছে৷ মঙ্গলবারের ঘটনার পর শাসক দলের তরফে জানানো হয়েছিল, বুধবার রাজ্যের সর্বত্র দিল্লি-কাণ্ডের প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণ মিছিল হবে৷ বস্ত্তত, মঙ্গলবার সন্ধ্যাতেই কলকাতা-সহ রাজ্যের জেলাগুলিতে তৃণমূল মিছিল বার করে দেয়৷ ওই রাতে উত্তর কলকাতার একটি বড় মিছিলের আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে আসার কথা ছিল৷ পুলিশ সেটিকে মৌলালির মোড়ে আটকে দেয়৷ বুধবার সকাল থেকেই শহরে রটে যায়, আলিমুদ্দিনে সিপিএমের রাজ্য দপ্তর আক্রান্ত হতে পারে৷ তার জন্য সেখানে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়৷ সন্ধ্যায় শাসক দলের একটি মিছিল আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় উত্তেজনা ছড়ায়৷
হুগলির খানাকুলের মাঝপাড়ায় দুপুরে শ'দেড়েক তৃণমূল কর্মী বোমা ছুড়ত ছুড়তে হাতে বন্দুক নিয়ে সিপিএম সমর্থকদের বাড়ি বাড়ি হামলা চালায় বলে অভিযোগ৷ বহু সমর্থক ভয়ে গ্রাম ছেড়ে পালায়৷ সেই সুযোগে প্রায় ৪০টি বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়৷ মহিলারা হামলাকারীদের পা জড়িয়ে ধরে কান্নাকাটি শুরু করেন৷ পরে দমকল আসে আগুন নেভাতে৷ আরও বেলায় আরামবাগের এসডিপিও বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন৷
বীরভূমের নানুরে সিপিএমের জোনাল অফিসে তৃণমূলের মিছিল থেকে হামলা চালানো হয়৷ অফিসে থাকা কর্মীদের ব্যাপক মারধর করা হয়৷ শেষে অফিসে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়৷ বাস স্ট্যান্ড লাগোয়া সিটু অফিসেও ভাঙচুর করা হয়৷ বাদ পড়েনি আরএসপি অফিসও৷ নানুরে অন্তত পাঁচটি অফিসে আগুন লাগানো হয়েছে বলে সিপিএমের অভিযোগ৷ হামলা হয়েছে বোলপুর, সিউড়ি, কীর্ণাহারেও৷ মল্লারপুরে এক সিপিএম নেতার বাসনের দোকানে শাসক দলের মিছিল থেকে আক্রমণ শানানো হয়৷ চলে লুঠপাটও৷ মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন দলের জেলা সহ-সভাপতি ধীরেন্দ্রমোহন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং স্থানীয় নেতা জয়শঙ্কর সিংহ৷ দুই নেতাই হাসপাতালে ভর্তি৷ দলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের দাবি, তাঁদের কেউ এ-সব হামলার সঙ্গে যুক্ত নয়৷
বর্ধমানের রানিগঞ্জ গির্জাপাড়া, রতিবাটি, জেকে নগর, বোগড়া, জামুরিয়ার চুরুলিয়া, বার্নপুরের একাধিক সিপিএম অফিসে বুধবারও হামলা হয়৷ কোথাও কোথাও আগুনও লাগানো হয়েছে৷ জেলা সম্পাদক অমল হালদার জানান, এ দিন বর্ধমান ২ নম্বর লোকাল কমিটির অফিস, শহরের গোলাপবাগ ও শ্যামলালেও হামলা চালায় তৃণমূল৷ বহু মূল্যবান জিনিস লুঠপাট করে তারা৷ তিনি জানান, গত দু'দিনে জেলার ১২ টি লোকাল এবং চারটি জোনাল অফিসে হামলা চালিয়েছে তৃণমূল৷ বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ইউনিয়ন অফিসও দখল করে নেয় তারা৷ জেলায় বহু জায়গায় সকাল থেকেই শাসক দল মিছিল করে দিল্লির ঘটনার প্রতিবাদে৷
সবচেয়ে বেশি পার্টি অফিস ভাঙচুর করা হয় কোচবিহার জেলায়৷ সিপিএমের দাবি, মঙ্গল এবং বুধবার সিপিএমের ৮৬ টি, ফরওয়ার্ড ব্লকের ২১ টি, কংগ্রেসের পাঁচটি এবং বিজেপির দু'টি পার্টি অফিসে ভাঙচুর এবং আগুন ধরানো হয়েছে৷ এ দিন সকালে কোচবিহারের কেদারহাটে ফরওয়ার্ড ব্লকের একটি অফিস জ্বালিয়ে দেওয়া হয়৷ পাটছড়া এবং নাজিরহাটেও তাদের অফিস ভাঙচুর করা হয়৷ বুধবার নাটাবাড়ি, দেওচড়াই, হাড়িভাঙা, শীতলখুচি-সহ বিভিন্ন এলাকায় সিপিএমের ২০টি পার্টি অফিসে ব্যাপক ভাঙচুর চলে৷ পুন্ডিবাড়িতে ক্ষিতীশ বিশ্বাস নামে এক সিপিএম নেতাকে মারধর করা হয়৷ সব মিলিয়ে ছ'জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন শাসক দলের আক্রমণে৷ তাদের কোপ থেকে রেহাই পায়নি কংগ্রেসও৷ তাদের পাঁচটি অফিস ভেঙে তছনছ করে দেওয়া হয়েছে৷ ভাঙা হয়েছে বিজেপিরও দু'টি অফিস৷ মার খেয়েছেন দীপক বর্মন নামে এক বিজেপি নেতা৷
সিপিএমের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক অমিয় পাত্র জানান, বুধবার রাইপুর থানার তিনটি এবং শালতোড়া থানার তিনটি অফিসে ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ তালড্যাংরায় দলের নেতা-কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তৃণমূল হুমকি দিচ্ছে৷ আতঙ্কে অনেকে ঘরছাড়া৷ পুলিশ সুপার মুকেশ কুমারও স্বীকার করে নিয়েছেন সিপিএম পার্টি অফিসে আগুন লাগানোর কথা৷
শিলিগুড়িতে সন্ধ্যায় উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেবের নেতৃত্বে তৃণমূলের একটি বিশাল মিছিল সিপিএমের জেলা দপ্তর অনিল বিশ্বাস ভবনের সামনে দিয়ে যাচ্ছিল৷ সিপিএমেরও একটি মিছিল বেরোয় তার আগে৷ তাদের অভিযোগ, শাসক দলের মিছিল থেকে সিপিএম জেলা দপ্তরে ইট ছোড়া হয়৷ তৃণমূলের পাল্টা দাবি, সিপিএম অফিস থেকে মিছিলে হামলা করা হয়েছে৷ এক সময় দু'দলের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়৷ তখন অবশ্য গৌতমবাবু ঘটনাস্থলে ছিলেন না৷ পুলিশ এর পর লাঠি চালায়৷ উভয় পক্ষেরই বেশ কয়েক জন জখম হন৷ দলীয় সমর্থকদের উপর পুলিশ লাঠি চালানোয় মন্ত্রী প্রকাশ্যেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন৷ দলীয় সূত্রের খবর, তার পরই পুলিশ কমিশনারের নির্দেশে বিশাল পুলিশ বাহিনী অনিল বিশ্বাস ভবনে অভিযান চালায়৷ নদিয়ার বগুলায় সিটুর একটি অফিসে তৃণমূলের ঝান্ডা লাগিয়ে সেটির দখল নেয় তৃণমূল৷
তবে অন্যরকম ঘটনা ঘটে খড়গপুরে৷ মঙ্গলবার গভীর রাতে খড়গপুর লোকাল থানার মাংলই গ্রামে তৃণমূলের একটি মিছিলের উপর সিপিএম নেতা-সমর্থকরা তির, টাঙ্গি, বল্লম নিয়ে হামলা চালায় বলে অভিযোগ৷ তাতে চার তৃণমূল নেতা জখম হয়ে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন৷ বুধবার জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব আহত নেতাদের দেখতে হাসপাতালে যান৷
বুধবার রাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীর শিমুলতলায় সিপিএমের একটি পার্টি অফিস জ্বালিয়ে দেওয়া হয়৷ উত্তর ২৪ পরগনার হাড়োয়ায় একটি জোনাল অফিস, শাসনের বেলিয়াঘাটায় লোকাল কমিটির অফিসে ভাঙচুর চলে৷ বড়া এলাকার পিরতলায় একটি অফিসে আগুন লাগানো হয়৷ জগদ্দলে সিপিএমের লোকাল কমিটির অফিসে রাতে আগুন লাগানো হয়৷ দীনদয়াল চক্রবর্তী নামে এক অশীতিপর দলীয় কর্মী অগ্নিদগ্ধ হন৷ তাঁকে প্রথমে ব্যারাকপুরের বি এন বসু হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়৷ পরে পাঠানো হয় আরজি কর হাসপাতালে৷ বালুরঘাটে আক্রান্ত হয়েছেন প্রাক্তন মন্ত্রী নারায়ণ বিশ্বাস ও মিনতি ঘোষ৷ আহত হন সিপিএমের দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলা সম্পাদক মানবেশ চৌধুরী৷
http://eisamay.indiatimes.com/attack-against-cpm/articleshow/19488948.cms
বাঁকুড়ায় সূর্যকান্তকে ঘিরে তৃণমূলের বিক্ষোভ, কালো পতাকা
ঝিলিমিলি: 'অহংকার নয়, মাথা নত করে যেতে হবে মানুষের কাছে' - এই বার্তা দিয়ে দলীয় জনসভা শুরু করেও শেষরক্ষা হল না৷ সভা থেকে ফিরতি পথে খাতড়ার পেট্রোল পাম্প মোড়ে তৃণমূলের বিক্ষোভের মুখে পড়লেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র৷ তৃণমূল সমর্থকেরা দলের পতাকা হাতে তাঁর গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে পড়েন৷ তিন-চার মিনিট গাড়ি থামিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়৷ দেখানো হয় কালো পতাকাও৷ পরে অবশ্য পুলিশি হস্তক্ষেপে নির্বিঘ্নেই বেরিয়ে আসেন সূর্যকান্ত৷ এ ব্যাপারে খাতড়ার তৃণমূল নেতা শ্যামল সরকার জানান, 'দিল্লির ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার খাতড়ায় গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে৷' তবে সিপিএমের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক অমিয় পাত্র বলেন, 'এ রকম ঘটনা না ঘটলেই ভালো হত৷'
বৃহস্পতিবার বিকেলে বাঁকুড়ার ঝিলিমিলি হাইস্কুল মাঠে দলীয় জনসভায় গিয়েছিলেন সূর্যবাবু৷ বিকেল চারটে নাগাদ তিনি ঝিলিমিলি পৌঁছন৷ তিনি আসার আগে থেকেই সভাস্থলের আশেপাশে, গাছে বেঁধে দেওয়া হয় ছিল কালো পতাকা৷ রাস্তায় বেশ কিছু 'গো ব্যাক সূর্যকান্ত মিশ্র' লেখা পোস্টারও লাগানো হয়৷ এ দিনের সভায় প্রত্যাশিত ভাবেই ছাত্রনেতা সুদীপ্তর মৃত্যু থেকে রাজ্যজুড়ে তৃণমূলের সন্ত্রাসের প্রসঙ্গ উঠে আসে সূর্যবাবুর বক্তব্যে৷ তিনি বলেন, 'দিল্লিতে অর্থমন্ত্রী ও পঞ্চায়েতমন্ত্রীর উপর হেনস্থার ঘটনায় আমাদের দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের তরফে ক্ষমা প্রার্থনা করা হয়েছে, নিন্দাও করা হয়েছে৷ কখনওই কোথাও এই ঘটনাকে 'তুচ্ছ' বা 'ছোট ঘটনা' বলা হয়নি৷ কিন্ত্ত তার পরেও রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন জায়গায় সিপিএমের দলীয় কার্যালয়গুলিতে, দলের কর্মী-সমর্থকদের উপর দু'দিন ধরে পরিকল্পিত ভাবে হামলা চালানো হয়েছে৷ বুধবার রাতেও বাঁকুড়ার ইঁদপুরে সিপিএমের জোনাল অফিসে ভাঙচুর করে আগুন লাগানো হয়েছে৷ শিলিগুড়িতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৪৮ জন সিপিএম কর্মীকে৷ অথচ তাঁদের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ, তা জানা যায়নি৷ রাতভর আটকে রাখা হয়েছে অশোক ভট্টাচার্য, জীবেশ সরকারের মতো নেতাকে৷ প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে ছাত্রছাত্রীদের নির্বিচারে মারধর করা হয়েছে৷ বেকার ল্যাবরেটরি ভাঙচুর করেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ৷ এগুলোকে ন্যক্কারজনক ছাড়া আর কী বলব?' পাশাপাশি সুদীপ্ত গুপ্তর মৃত্যুর প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, 'আমরা সুদীপ্তর পরিবারকে বলেছি, ওকে ফিরিয়ে দিতে পারব না৷ কিন্ত্ত ওর মৃত্যুর প্রতিবাদে লড়াই চলবে৷' সভায় বিরোধী দলনেতা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সাংসদ বাসুদেব আচারিয়া, ঝিলিমিলির বিধায়ক দেবলীনা হেমব্রম, সিপিএমের জেলা সম্পাদক অমিয় পাত্র প্রমুখ৷
গত দু'দিনের তুলনায় বৃহস্পতিবার অবশ্য জেলায় জেলায় হামলার ঘটনা তুলনামূলক ভাবে কম৷ শিলিগুড়ির বন্ধও মোটের উপর ছিল শান্তিপূর্ণ৷ দক্ষিণবঙ্গে অবশ্য বিচ্ছিন্ন গোলমালের খবর মিলেছে৷ খড়দহের শান্তিনগরে তৃণমূলকর্মীরা সিপিএম সমর্থিত এক নাটকের দলের মহলাঘর পুড়িয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ৷ ঘটনাস্থল থেকে একটি কেরোসিনের টিন উদ্ধার করেছে পুলিশ৷ তবে আগুন বেশি দূর ছড়ানোর আগেই স্থানীয় বাসিন্দারা তা নিয়ন্ত্রণে আনেন৷ বুধবার খানাকুলের পাতুলের মাঝপাড়ায় প্রায় ৪০টি বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়৷ অভিযোগের নিশানায় তৃণমূল৷ এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে৷ বুধবারই ব্লক প্রশাসনের তরফে খাবার-সহ ত্রাণসামগ্রী পাঠানো হয় এলাকায়৷ কিন্ত্ত ক্ষিপ্ত সিপিএম সমর্থকেরা তা প্রত্যাখ্যান করেন৷ বুধবার রাতেই ফের গোঘাটের ভাদুর ও গোবিন্দপুর এলাকায় সিপিমের দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ৷ ভাস্কর রায়, স্বপন মণ্ডল ও নবকুমার পাত্র নামে গোঘাটের তিন সিপিএম নেতার বাড়িতেও ভাঙচুর করা হয় বলে তাঁরা নালিশ জানান৷ বৃহস্পতিবার সকালে আরামবাগের খালোড় গ্রামে গৌরহাটি এক নম্বর অঞ্চলের সিপিএম দপ্তরে ভাঙচুর ও আগুন লাগানোর অভিযোগ উঠেছে৷ জেলার তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য আগাগোড়াই অস্বীকার করে গিয়েছেন সমস্ত অভিযোগ৷ তাঁদের দাবি, সিপিএম নিজেরাই এ রকম কাণ্ড ঘটিয়ে তৃণমূল সমর্থকদের দোষারোপ করছে৷
শান্তির বাংলাদেশ অশান্তির সূত্রদের রা নেই -মহিউদ্দিন চৌধুরী
চট্টগ্রাম, /আর"ঃ
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক সিটি মেয়র আলহাজ্ব এ.বি.এম. মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেছেন, একাত্তরের ঘাতকদের রুখতে আমরা ঘরে বসে নেই। যেখানেই তাদের ঠাই পাওয়া যাবে সেখানেই প্রতিরোধ করা হবে। এই ধর্মান্ধ মৌলবাদীরা পবিত্র ইসলামের নামে '৭১ সালে যা করছে এখনও তা করছে। তাদেরকে প্রতিরোধ করাই আমাদের ইমামী দায়িত্ব।
আজ দুপুর ১২টায় অলংকার চত্বরে এস.এম. আলমগীরের সভাপতিত্বে পাহাড়তলী থানা সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির আয়োজিত হরতাল ও নৈরাজ্য বিরোধী সমাবেশে তিনি প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, খালেদা জিয়া যুদ্ধাপরাধীদের রার জন্য মাঠে নেমেছেন। তাঁর নেতৃত্বের হরতালের নামে বোমাবাজী, অগ্নি সংযোগ, জাতীয় সম্পদ ধ্বংস করা হচ্ছে। তিনি উস্কানী দিয়ে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের নির্দেশনা দিয়েছেন। এখন দেশপ্রেমিক সামরিক বাহিনীকে উশকে দিয়ে তাদের ভারমুর্তি নষ্ট করার পায়তারা করা হচ্ছে। এই অভিযোগে খালেদা একদিন রাষ্ট্রদ্রোহী হিসেবে বিচারের মুখোমুখি হবেন।
তিনি বিশেষ করে চট্টগ্রামকে শান্তি জনপদ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এখানে কেউ মানুষে মানুষে সম্প্রীতি নষ্ট করলে তার রা নেই। তিনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনকে এ ব্যাপারে শান্তি নষ্টকারীদের কঠোর হস্তে দমন করার আহ্বান জানান।
ক্রসফায়ারের ভয় না থাকায় দক্ষিনাঞ্চলের চরমপন্থীরা আবারও তাদের তৎপরতা শুরু
এম শিমুল খান, খুলনা :
বাংলাপোষ্ট২৪/ই: মৃত্যুভয় অর্থাৎ ক্রসফায়ারের (এনকাউন্টারের) ভয় না থাকায় খুলনাসহ দক্ষিনাঞ্চলের চরমপন্থী ও সন্ত্রাসীরা খুলনা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় আবারও নতুন করে তাদের অপতৎপরতা শুরু করেছে। দেশের বিভিন্ন কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে বাইরে এসে এবং পলাতক জীবন থেকে তারা দলকে সংঘটিত করার জন্য হত্যা, চাঁদাবাজী, বোমাবাজী, অপহরণ করে হত্যার মত কর্মকান্ড চালাতে শুরু করেছে।
তাদের সর্ব শেষ শিকারে পরিনত হয়েছেন খুলনা মহানগরীর নতুন বাজার এলাকার মৎস্য ব্যবসায়ী সেলিম রেজা ওরফে ন্যাটা সেলিম। আইন বিরোধী নিষিদ্ধ এই সংগঠন গুলোর তৎপরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় এ অঞ্চলের রাজনৈতিক নেতা, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী ও সাধারণ জনগনের মধ্যে আবারো নতুন করে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে।
পাবনায় তিন পুলিশ সদস্যসহ চারজন চরমপন্থীদের হামলায় নিহত হওয়ার পর আইন শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর মধ্যেও আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। চরমপন্থী ও সন্ত্রাসীরা তাদের তৎপরতা ও উপস্থিতি জানান দিতে বরাবরের মত এবারও একের পর এক হত্যা, হত্যার হুমকি, চাঁদাবাজী, ছিনতাই, বোমাবাজী এমনকি বিভিন্ন স্থানে বৈঠকও করতে শুরু করেছে।
আগামী জাতীয় নির্বাচনে ব্যবহৃত হওয়ার জন্যও তারা প্রস্তুতি গ্রহণ করছে বলে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে জানা গেছে। চরমপন্থী ও সন্ত্রাসীদের হাতে অত্যাধুনিক যে সব আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে তা পুলিশ বা র্যাবের কাছেও নেই বলে তারা দাবি করছে দীর্ঘ দিন ধরে। রাজনৈতিক নেতা ও প্রভাবশালীদের আশ্রয় প্রশ্রয়ে থাকায় সহজে তাদেরকে ধরতেও পারছেনা পুলিশ ও র্যাব।
খুলনায় ইতোপূর্বে এক ডজন চরমপন্থী দলের অস্তিত্ত থাকলেও এখন বেশ কয়েকটি দল একত্রিত হয়ে তাদের কর্মকান্ড পরিচালনা করছে বলে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে জানা গেছে। পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থা ও র্যাব সূত্রে জানা যায়, স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকে খুলনা অঞ্চলে চরমপন্থীদের তৎপরতা শুরু হলেও ১৯৯৫ সালের পর থেকেই তাদের তৎপরতা ক্রমেই ভয়ংকর হতে থাকে।
তাদের হাতে একে একে খুন হয় এ অঞ্চলের প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, পুলিশ ও সাধারণ জনগন। অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌছায় যে প্রতিদিনই খুলনা বিভাগের কোন না কোন জেলায় খুন, বোমাবাজী, চাঁদাবাজী, ডাকাতির ঘটনা ঘটতে থাকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের জন্য ১৯৯৯ সালে তৎকালীন সরকার সাধারণ ক্ষমার মাধ্যমে চরমপন্থী ও সন্ত্রাসীদের সুস্থ্য জীবনে ফেরার সুযোগ করে দেয়।
সরকারের সাধারণ ক্ষমার সুযোগে খুলনা অঞ্চলের কয়েক শত চরমপন্থী ও সন্ত্রাসী অস্ত্র জমা দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার চেষ্টা করে। অনেককে আনসার বাহিনীতে চাকরী দেওয়া হয়। কিন্তু চাকরী পাওয়া শতকরা ৯০ জন পালিয়ে এসে অন্ধকার জগতে ফিরে যায়। তাদের অভিযোগ আনসার বাহিনীতে তাদের চাকরী দিয়ে পূনর্বাসন করা হলেও অন্যান্যদের মত সুযোগ সুবিধা তারা কোন সময়ই পায়নি।
ফলে অবহেলার স্বীকার হয়ে তারা অন্ধকার জগতে ফিরে যেতে বাধ্য হয়। ২০০১ সালের পর থেকে চরমপন্থী ও সন্ত্রাসীরা এ অঞ্চলে আবারও মুর্তিমান আতংকে পরিনত হয়। তাদের হাতে একের পর এক খুন হতে থাকে এ অঞ্চলের সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়ী ও পুলিশ। খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, চুয়াডাঙ্গাসহ বিভিন্ন স্থানে পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে তারা হাতিয়ে নেয় সরকারী অস্ত্র ও গোলাবারুদ। সাধারণ জনগনের চেয়ে বেশী আতংক ছড়িয়ে পড়ে পুলিশ বিভাগে।
এ সময়ে চরমপর্ন্থী দলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভয়ংকর হিসাবে পরিচিতি পায় পূর্ব বাংলার কমিউনিষ্ট পার্টি (এমএল-জনযুদ্ধ); তারা নিজেদের প্রাধান্য বজায় রাখতে অন্য চরমপন্থী দল এমনকি নিজের দলের সদস্যদেরকেও অবলিলায় হত্যা করেছে। এদের সাথে প্রায় সমানতালে চলেছে পিবিসিপি এমএল, নিউ বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টি। তিন দলের তান্ডব থামাতে সরকার কোন উপায় না পেয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন গঠন করে মাঠে নামায়।
র্যাব ও পুলিশের যৌথ তৎপরতায় চরমপন্থী দল গুলোর অনেক নেতা ও কর্মী এনকাউন্টারে মারা যায়। পুলিশ ও র্যাবের বেপরোয়া মনোভাবের কাছে টিকতে না পেরে অনেকে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পালিয়ে জীবন বাঁচানোর চেষ্টা চালায় এ অঞ্চলের মৃনাল ওরফে গোষাই, আলমগীর, বেলাল, মনতোষ, বিপ্লবসহ কয়েকশত চরমপন্থী ও সন্ত্রাসী। ক্রসফায়ারের মুখে ২০০৬ সালের শেষ দিকে চরমপন্থীদের তৎপরতা কমে যাওয়ায় পুলিশ ও র্যাবের তৎপরতাও বেশ শিথিল হয়ে যায়।
এ সুযোগে আবারও চরমপন্থীরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। এরপর শুরু হয় অপারেশন স্পাইডার ওয়েব ও ক্লিন হার্ট। আবারও কমে যায় নিষিদ্ধ দল গুলোর কর্মকান্ড। তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে যৌথ বাহিনীর অভিযানের মুখে আবারও পালিয়ে যেতে শুরু করে সন্ত্রাসীরা। ২০০৯ সালের মাঝামাঝি সময়ে চরমপন্থীরা আবারও তাদের তৎপরতা শুরু করে। চরমপন্থীদের হাতে খুলনা অঞ্চলের খুলনা, কুষ্টিয়াসহ কয়েকটি জেলায় একই রাতে দু'তিন জন করে খুন হতে থাকে।
চরমপন্থী ও সন্ত্রাসীদের তৎপরতা রোধে কঠোর ব্যবস্থার অংশ হিসেবে শুরু হয় পুলিশ ও র্যাবের এনকাউন্টার। কিন্তু এনকাউন্টারকে মানবতা বিরোধী বলে দাবি করে এর বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করে মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থাগুলো। ফলে থেমে যায় এনকাউন্টার। দীর্ঘ দিন এনকাউন্টার বন্ধ থাকায় আবারও চরমপন্থীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তাদের হাতে এ অঞ্চলের কয়েক ডজন রাজনৈতিক নেতা ও সাংবাদিক নিহত হয়েছে।
তাদের সর্বশেষ শিকার হয়েছেন খুলনা মহানগরীর নতুন বাজার এলাকার মৎস্য ব্যবসায়ী সেলিম রেজা ওরফে ন্যাটা সেলিম। এ ব্যাপারে খুলনার একজন উর্ধতন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, চরমপন্থীরা যেন সব দিক থেকে ঘিরে ধরার চেষ্টা করছে। যারা এক সময়ে চরমপন্থী ছিলো তারা জেলখানা থেকে জামিনে বেরিয়ে আবারও সংঘটিত হওয়ার চেষ্টা করছে।
কিন্তু পুলিশ সদা তৎপর থাকায় তারা সংঘঠিত হতে পারছেনা। পুলিশ এদের আর মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে দেবে না। পুলিশ আরও জানিয়েছে, চরমপন্থী ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে পুলিশ ও অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা সব সময় সজাগ রয়েছে। চরমপন্থীদের কোন মতেই ছাড় দেওয়া হবে না।
নতুন বার্তা ডটকম
ঢাকা: তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য হাফিজ উদ্দিন খান বলেছেন, "বিরোধী দলের সবাইকে জেলে ভরলে বড় দুই দলের মধ্যে সমাঝোতা সুদূর পরাহত হয়ে যাবে। এখন সবার কাজ হবে দুই দলকে চাপ দেয়া একটি সমঝোতার পথে আসার জন্য।"
শুক্রবার রাজধানীর ব্র্যাক ইন সেন্টারে টিআইবি আয়োজিত 'বাংলাদেশের নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা: প্রক্রিয়া ও কাঠামো প্রস্তাবনা' শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেন হাফিজ উদ্দিন খান।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দলীয় সরকারের অধীনে গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় বলেও মন্তব্য করেন হাফিজ উদ্দিন।
তিনি বলেন, "যে পদ্ধতিতেই নির্বাচন হোক না কেন এক্ষেত্রে দুই দলের মধ্যে সমঝোতার মনোভাব থাকতে হবে।"
তিনি বলেন, "পাকিস্তানের মতো একটি রাষ্ট্র যারা প্রায় অকার্যকর রাষ্ট্রের দিকে চলে গেছে, তারা যদি একটা নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থায় পৌঁছাতে পারে তাহলে আমরা কেন পারবো না। আমরা তাদের চেয়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অধিক অগ্রসর। এক্ষেত্রে বিষয় হলো আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর সমঝোতা বা আলোচনা করার কোনো আগ্রহ আছে কিনা। কোনো শর্ত নিয়ে যুদ্ধ করলে, ঝগড়া করলে কাজ হবে না।"
হাফিজ উদ্দিন বলেন, "রাজনৈতিক দলগুলোর মূল উদ্দেশ্য হলো একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করা। আর এই উদ্দেশ্য থাকরে সমঝোতা হয়ে যাবে।"
http://www.natunbarta.com/national/2013/04/12/20909/781fa89bb4cc1e4c0c86720124ad57b1
নতুন বার্তা ডটকম
গ্রেফতার ২, দূরত্ব বাড়িয়ে সিপিএমকেই দুষছে তৃণমূল |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে বুধবারের হামলার ঘটনা থেকে দূরত্ব তৈরি করতে তৎপর হল তৃণমূল কংগ্রেস। বুধবার ঘটনার পরেই তৃণমূল ছাত্র পরিষদের তরফে দাবি করা হয়েছিল, তাদের কেউ এই হামলায় জড়িত নয়। বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও হাসপাতাল থেকেই ফোনে এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, "প্রেসিডেন্সির ঘটনায় যদি তৃণমূলের কোনও কর্মী জড়িত থাকেন, তা হলে তাঁর বিরুদ্ধে নিশ্চয়ই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু প্রাথমিক অনুসন্ধানের পর যেটুকু জানতে পেরেছি, তাতে দেখা যাচ্ছে বিক্ষোভকারীরা তৃণমূলের কেউ নয়।" এ দিনই ওই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দু'জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারা কোন রাজনৈতিক দলের সদস্য, তা জানানো হয়নি। অনেকেরই মতে, গোটা ঘটনা থেকে তৃণমূলের দূরত্ব তৈরি করে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার পথ পরিষ্কার করে দিলেন মমতা। যা নিরপেক্ষ প্রশাসক হিসেবে তাঁর ভাবমূর্তি তৈরি করতে সাহায্য করবে। তৃণমূল দায় এড়াতে চাইলেও টেলিভিশন চ্যানেলের ছবিতে অবশ্য ঘটনার আগে প্রেসিডেন্সি কলেজের গেটে ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের দলীয় কাউন্সিলর পার্থ বসুকে দেখা গিয়েছে। |
বুধবার কলেজ স্ট্রিটে মিছিলে ছিলেন পার্থ বসুও। —ফাইল চিত্র |
যদিও ওই তৃণমূল নেতার দাবি, "দিল্লিতে রাজ্যের মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে সিপিএমের হামলার প্রতিবাদে ওই দিন আমি কলেজ স্ট্রিটে মিছিল করি। কিন্তু মিছিল নিয়ে প্রেসিডেন্সি কলেজে যাইনি। হামলার ঘটনায় আমার উপস্থিতি প্রমাণিত হলে কাউন্সিলর-সহ সব পদে ইস্তফা দেব।" প্রেসিডেন্সিতে হামলার যে ছবি টিভি-র পর্দায় দেখা গিয়েছে, তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ও। এ দিন তিনি বলেন, "ভাঙচুর, হইচইয়ের আলাদা আলাদা ছবি জুড়ে দেখানো হচ্ছে।" গোটা ঘটনার পিছনে সিপিএমের ষড়যন্ত্র থাকতে পারে বলেও তৃণমূলের আশঙ্কা। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের তরফে বুধবার অভিযোগ করা হয়েছিল, প্রেসিডেন্সির সামনে দিয়ে তাদের মিছিল যাওয়ার সময় কলেজের ভিতর থেকে এসএফআই সমর্থকেরা ইট ছোড়ে। এই মর্মে এ দিন পুলিশে অভিযোগও দায়ের করেছে তারা। তবে অভিযোগে সুনির্দিষ্ট ভাবে কারও নাম করা হয়নি বলে পুলিশ সূত্রে খবর। |
প্রেসিডেন্সিতে শিক্ষামন্ত্রী। বৃহস্পতিবার।—নিজস্ব চিত্র |
মমতা নিজেও এ দিন বলেন, "আমার দলের অনেকের আশঙ্কা, যোজনা কমিশনের সামনে হামলার ঘটনা লঘু করার জন্য এটা সিপিএমের কৌশল। কিন্তু আমি চাই, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত হোক। সত্য উদ্ঘাটিত হোক। এবং যে-ই এ ধরনের কাজ করে থাকুন, তাঁর শাস্তি হোক।" এ দিন বিকেলে প্রেসিডেন্সি কলেজে গিয়ে একই অভিযোগ করেছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও এ দিন বলেছেন, "যারা গোলমাল করেছে তারা তৃণমূলের কেউ নয়। ওই গোলমালের পিছনে কারা আছে তা তদন্তে ধরা পড়বে। এর পিছনে কাদের ষড়যন্ত্র, তা প্রকাশ করতে চাই।" সিপিএম অবশ্য তৃণমূলের এই অভিযোগ উড়িয়ে দিচ্ছে। এসএফআই-এর রাজ্য সম্পাদক দেবজ্যোতি দাসের তির্যক প্রশ্ন, "তৃণমূলের কাউন্সিলররাও কি আজকাল এসএফআই করছেন?" বুধবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ জোড়াসাঁকো থানায় যে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন, তাতেও তৃণমূলকেই দায়ী করা হয়েছে। গোটা ঘটনার বৃত্তান্ত জানিয়ে বৃহস্পতিবার রাজ্যপাল তথা আচার্যের কাছে রিপোর্টও পাঠিয়েছেন তাঁরা। |
প্রেসিডেন্সির ক্যাম্পাসে পড়ুয়াদের প্রতিবাদ। প্ল্যাকার্ডে ভুল বানান অবশ্য প্রতিষ্ঠানের সুনাম নিয়ে উদ্বেগ বাড়িয়েছে শিক্ষাজগতে। —নিজস্ব চিত্র |
রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন এ দিন বলেন, প্রেসিডেন্সিতে যারা ভাঙচুর চালিয়েছে, তাদের অপরাধী হিসেবেই দেখা উচিত। তিনি বলেন, "হামলাকারীরা কেউ ছাত্র ছিল না। তারা বহিরাগত।'' পুলিশ অবশ্য এ দিন দু'জন ছাত্রকেই গ্রেফতার করেছে। তাঁদের নাম শুভজিৎ বর্মন এবং জয়ন্ত হাওলাদার। শুভজিতের বাড়ি হাওড়ার বোটানিক্যাল গার্ডেন এলাকায়। জয়ন্ত ক্যানিংয়ের শক্তিপল্লির বাসিন্দা। পুলিশ জানিয়েছে, এঁরা কেউই প্রেসিডেন্সির ছাত্র নন। ভাঙচুরের প্রতিবাদে এ দিন পথে নেমেছিল প্রেসিডেন্সি। ঐতিহ্যবাহী ওই প্রতিষ্ঠানের বর্তমান ও প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীরা বৃহস্পতিবার কলেজ স্ট্রিট থেকে ধর্মতলার রানি রাসমণি রোড পর্যন্ত মিছিল করেন। শিক্ষিক-শিক্ষিকা, আধিকারিকেরাও তাতে সামিল হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা দলমত নির্বিশেষে এ দিন ধর্মঘট পালন করেন। ফলে ক্লাস হয়নি। সওয়া দুটো নাগাদ মিছিল শুরু হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা, রেজিস্ট্রার ও অন্য আধিকারিকেরাও তাতে পা মেলান। পরে রাজভবনে গিয়ে তাঁরা স্মারকলিপি দেন। তবে বুধবারই কেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রাজ্যপালের কাছে যাননি, তা নিয়ে এ দিন কটাক্ষ করেছেন পার্থবাবু। তাঁর কথায়, "দু'জনের প্রতি সম্মান জানিয়েই বলছি, উপাচার্য এবং রেজিস্ট্রার সংবাদমাধ্যমের সামনে কথা না বলে আচার্য তথা রাজ্যপালের সঙ্গে কথা বলতে পারতেন। ওঁদের তো গাড়ি রয়েছে। সোজা রাজভবনে গিয়ে কথা বললে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য বজায় থাকত।" প্রেসিডেন্সি-কাণ্ডে কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য মানবাধিকার কমিশন। বলা হয়েছে, বিশেষ বা অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার পদমর্যাদার কোনও অফিসারকে দিয়ে ঘটনার তদন্ত করে তিন সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট দিতে হবে। কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত হয়েও এই ঘটনার তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কমিশনের পক্ষ থেকে তদন্তের ভার দেওয়া হয়েছে প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ অমল মুখোপাধ্যায়কে। http://www.anandabazar.com/12cal1.html |
No comments:
Post a Comment