Thursday, August 27, 2015

Thus, wheat is imported! পোকায় খাওয়া গম আমদানি পাকাপোক্ত * ৫০ হাজার টন আমদানির টেন্ডার জমা দেওয়ার শেষ দিন আজ

Thus, wheat is imported!
পোকায় খাওয়া গম আমদানি পাকাপোক্ত
* ৫০ হাজার টন আমদানির টেন্ডার জমা দেওয়ার শেষ দিন আজ 



ব্রাজিল থেকে নিম্নমানের গম আমদানির কারণে দেশজুড়ে সমালোচনার উত্তাপ কমতে না কমতেই পোকায় খাওয়া গম আমদানির ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করেছে খাদ্য অধিদপ্তর। গত ২৯ জুলাই গম আমদানির স্পেসিফিকেশনের (বিনির্দেশমালা) সংশোধনী চূড়ান্ত করেছে অধিদপ্তর। নতুন স্পেসিফিকেশনে বলা হয়েছে, আমদানি করা গমে ক্ষতিগ্রস্ত দানা ৩ শতাংশ পর্যন্ত গ্রহণযোগ্য। এই ৩ শতাংশের মধ্যে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ পোকায় খাওয়া দানা গ্রহণযোগ্য। অথচ দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট ব্রাজিল থেকে আনা ওই গম নিতে কাউকে বাধ্য করা যাবে না বলে সরকারকে বিশেষ নির্দেশনা দেন। মূলত নষ্ট গম আমদানি ও দুর্নীতির সুযোগ রাখার জন্যই স্পেসিফিকেশন শিথিল করা হয়েছে, যা সংবিধানের লঙ্ঘন বলছেন আইনজীবীরা।
নতুন স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী ইতিমধ্যেই ৫০ হাজার মেট্রিক টন গম আমদানির টেন্ডার (দরপত্র) আহ্বান করা হয়েছে। এই টেন্ডারেই বলা হয়েছে, দশমিক ৫ শতাংশ পোকায় খাওয়া গম গ্রহণযোগ্য হবে। কোনো আন্তর্জাতিক টেন্ডারে এই প্রথম পোকায় খাওয়া গম নেওয়ার কথা উল্লেখ করা হলো। এর আগে যত টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে, তার কোনোটিতেই পোকায় খাওয়া গম নেওয়ার শর্ত ছিল না।
বিদেশ থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন গম আমদানির জন্য খাদ্য অধিদপ্তর গত ১৩ আগস্ট যে আন্তর্জাতিক টেন্ডার আহ্বান করেছে, তার শর্তাবলির ২৬(২) নম্বরে আমদানিকৃত গমের ক্ষতির পরিমাণ কী হবে তা উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, দশমিক ৫ শতাংশ পোকায় খাওয়া গম সরবরাহ করা যাবে। খাদ্য অধিদপ্তরে এই টেন্ডার আজ বৃহস্পতিবার জমা দেওয়ার শেষ দিন। কিন্তু টেন্ডার জমা দেওয়ার আগেই এ বিষয়ে আপত্তি তুলেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও অ্যাডভোকেট পাবেল মিয়া। পোকায় খাওয়া গম আমদানির সুযোগ রেখে দেওয়া ওই দরপত্র বাতিল করার জন্য তাঁরা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আইনি নোটিশ দিয়েছেন। তাঁরা গত ২৪ আগস্ট খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও প্রকিউরমেন্ট শাখার পরিচালককে পোকায় খাওয়া গম আমদানি থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করেছেন। নোটিশ পাওয়ার তিন দিনের মধ্যে ওই টেন্ডার বাতিল করতে বলা হয়েছে। অন্যথায় তাঁরা আইনগত পদক্ষেপ নেবেন বলে নোটিশে বলেছেন।
নতুন স্পেসিফিকেশনে বলা হয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত দানা ৩ শতাংশ পর্যন্ত গ্রহণযোগ্য। এই ৩ শতাংশের মধ্যে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ গমে ক্ষতিগ্রস্ত দানা ও শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ পোকায় খাওয়া দানা গ্রহণযোগ্য। আগের স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত দানা সর্বোচ্চ ৭ শতাংশ পর্যন্ত গ্রহণ করা হতো। এর মধ্যে শন্য দশমিক ৫ শতাংশ গমে ক্ষতিগ্রস্ত দানা মেনে নেওয়া হলেও পোকায় খাওয়া দানার কোনো উল্লেখ ছিল না। এবারই প্রথম স্পেসিফিকেশনে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ পোকায় খাওয়া দানা গ্রহণের বিধান রাখা হয়েছে। খাদ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগের স্পেসিফিকেশনে আমদানিকৃত গমের টেস্ট ওয়েট ছিল সর্বনিম্ন ৭২ কেজি। নতুন স্পেসিফিকেশনে টেস্ট ওয়েট নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৬ কেজি। টেস্ট ওয়েট ৭৫ কেজির নিচে হলে তা গ্রহণ করা হবে না। আগে ভাঙা দানা সর্বোচ্চ ৮ শতাংশ গ্রহণ করা হতো। বর্তমানে তা ৫ শতাংশ পর্যন্ত গ্রহণ করা হয়। অন্য শ্রেণির মিশেল গম আগে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ পর্যন্ত গ্রহণ করা হতো। বর্তমানে তা ৫ শতাংশ পর্যন্ত গ্রহণ করা হয়। আগে গমের প্রোটিন মান সর্বনিম্ন ৯.৫০ শতাংশ গ্রহণ করা হলেও বর্তমানে ১২.৫০ শতাংশের কম গ্রহণ করা হয় না। এ ছাড়া পাথর বা কঙ্কর সর্বোচ্চ এক শতাংশ পর্যন্ত গ্রহণযোগ্য।
খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফয়েজ আহমদ কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আগের স্পেসিফিকেশনে ৪ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত দানার কথা উল্লেখ থাকত। নানা কারণে গম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর মধ্যে গরম, পোকাসহ আরো কারণ রয়েছে। সরবরাহকারী যদি পুরোটাই পোকায় খাওয়া দানা সরবরাহ করতেন তাহলে খাদ্য অধিদপ্তর তা নিতে বাধ্য হতো। বর্তমান স্পেসিফিকেশনে পোকায় খাওয়া দানা কতটা গ্রহণ করা হবে তা সুনির্দিষ্ট করা হয়েছে। অর্থাৎ ক্ষতিগ্রস্ত গম ৩ শতাংশ পর্যন্ত গ্রহণ করা হবে। এর মধ্যে পোকায় খাওয়া গম নেওয়া হবে শন্য দশমিক ৫ শতাংশ। বিষয়টি স্পেসিফিকেশনে নতুন হলেও এর চর্চা আগে থেকেই ছিল। বর্তমান স্পেসিফিকেশনে বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়েছে।'
তবে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী পাবেল মিয়ার পক্ষে আইনি নোটিশদাতা ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন কালের কণ্ঠকে বলেন, পোকায় খাওয়া গম আমদানির ধারা অন্তর্ভুক্তির ফলে দেশে নিম্নমানের গম আসবে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। নিম্নমানের গম আমদানির প্রক্রিয়া শুরু করে খাদ্যসচিব ও খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাধারণ মানুষের সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুণ্ন করেছেন। তিনি বলেন, সংবিধানের ১৮ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জনগণের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। সেখানে বলা হয়েছে, 'জনগণের পুষ্টির স্তর-উন্নয়ন ও জনস্বাস্থ্যের উন্নতি সাধনকে রাষ্ট্র অন্যতম প্রাথমিক কর্তব্য বলিয়া গণ্য করিবেন।' এ ছাড়া সংবিধানের ৩২ নম্বর অনুচ্ছেদে ব্যক্তির জীবনের স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। সেখানে হস্তক্ষেপ করা যাবে না। কিন্তু দেশে পোকায় খাওয়া গম আমদানি করে জনস্বাস্থ্য ও ব্যক্তিস্বাধীনতা ক্ষতিগ্রস্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যা বেআইনি। তিনি বলেন, টেন্ডারে পোকায় খাওয়া গম আমদানির শর্ত জুড়ে দেওয়ায় দুর্নীতিরও পথ খোলা হয়েছে। এ জন্যই দেশের জনগণের স্বাস্থ্য ও সম্পদের কথা বিবেচনা করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের টেন্ডার বাতিল করার জন্য আইনি নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এ নোটিশ পাওয়ার পর যদি ওই টেন্ডার বাতিল করা না হয় তবে রিট আবেদন করা হবে।
সম্প্রতি প্রথমবারের মতো ব্রাজিল থেকে বাংলাদেশে চার জাহাজে প্রায় আড়াই লাখ টন গম আমদানি করে খাদ্য অধিদপ্তর। এ গম রেশন হিসেবে পুলিশের কাছে গেলে পুলিশ তা গ্রহণ করতে আপত্তি জানায়। শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী নিম্নমানের গম কে বা কারা সরবরাহ করল, খাদ্য অধিদপ্তর কেন গ্রহণ করল তা খতিয়ে দেখার জন্য খাদ্যসচিব মুশফেকা ইকফাৎকে নির্দেশ দেন। এর মধ্যে এসব গম দেশের সব জেলায় ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি উচ্চ আদালতে গেলে এই গম কাউকে নিতে বাধ্য করা যাবে না বলে রায় দেওয়া হয়। কয়েকজন সংসদ সদস্য তাঁর নির্বাচনী এলাকার খাদ্য গুদাম থেকে এ গম বিতরণে বাধার সৃষ্টি করেন। একপর্যায়ে খাদ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালককে ওএসডি করা হয়। নতুন মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় সরকারের অতিরিক্ত সচিব ফয়েজ আহমদকে। তিনি খাদ্য অধিদপ্তরে যোগ দিয়েই নিম্নমানের গম নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে অবস্থানরত চতুর্থ জাহাজটির গম খালাস করতে আপত্তি জানান। শেষ পর্যন্ত ওই নিম্নমানের গম সরকারের খাদ্য অধিদপ্তর গ্রহণ না করলেও তা ব্রাজিলে ফেরত যায়নি। বাংলাদেশেরই কোনো কোনো সংস্থা এসব গম কিনে আটা করে দেশের বাজারে বিক্রি করেছে বলে অভিযোগ আছে।


--
Pl see my blogs;


Feel free -- and I request you -- to forward this newsletter to your lists and friends!

No comments:

Post a Comment